সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক:
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে দেয়া রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের স্বাক্ষরের পর আজ ৮৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট। ‘ফেব্রুয়ারি’ ভাষার মাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলায় এ মামলায় রায় দেন আদালত।
যেসব আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে তারা হলেন- ওয়াসিম আক্তর ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী , মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে শিমন, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে গাজী খান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন এবং আনিসুল ওরফে আনিস ও মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমানকে দেয়া ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তবে কারাবন্দি এই দুজনের এরই মধ্যে সাজাভোগ করা হয়ে গেলে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে। আর নিম্ন আদালতে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন মিয়াকে খালাস দেয়া হয়েছে। এ আসামি অন্য কোনো মামলায় আটক না থাকলে তাকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
হাইকোর্ট রায়ে বলা হয়, ‘সাক্ষীগনের সাক্ষ্য তৎসহ জব্দকৃত আলামত সমূহের প্রমানাদি, আসামীগনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উচ্চ আদালতের নজির সমূহ এবং সার্বিক পর্যালোচনায় আমরা মনে করি যে, ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক তার প্রদত্ত রায়ের মাধ্যমে আসামীগনের (আসামী সরোয়ার হোসেন ব্যতীত) বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড সহ অন্যান্য দন্ড প্রদানে কোন আইনগত ভুল করেননি।’
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার এ মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ১০ জঙ্গির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের রায় দেন। এছাড়াও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। পরে এ মামলার রায়সহ সকল নথি ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন একটি মামলা দায়ের করেন।
হাইকোর্ট রায়ে বলা হয়, যড়যন্ত্র করে এবং দুটি বোমা পোঁতার মধ্য দিয়ে যে অপরাধ তারা সংঘটিত করেছে তা ছিল ভয়ংকর ও জঘন্য। আসামীরা তাদের লক্ষ্যের ধারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল।
ডিএএম/এসকে//
Leave a Reply