স্পোর্টস ডেস্ক:
প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এলো আর্জেন্টিনা। পৌঁছে গেলো কোয়ার্টার ফাইনালে।
আগের ম্যাচে যেমন হয়েছে, সেই প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার দারুণ শুরু, গোল, এরপর দ্বিতীয়ার্ধে সেই অগ্রগামিতা ধরে রেখে জয়; সে দৃশ্যটারই পুনর্মঞ্চায়ন ঘটিয়েছে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে উঠে এসেছে এ গ্রুপের শীর্ষেও।
আগের ম্যাচে মাঠেই চোট পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে মাঠের বাইরে যেতে বলায় মেডিক্যাল দলের সঙ্গেও এক দফা বাকবিতণ্ডা হয়ে গিয়েছিল তার। এরপর গেল রাতে গুঞ্জন, মেসিকে নাকি বিশ্রামে রাখা হতে পারে এদিন, জানাচ্ছিল টিওয়াইসি স্পোর্টসসহ আর্জেন্টিনার শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। কিন্তু ম্যাচে দেখা গেল আর্জেন্টিনা অধিনায়ক আছেন বহাল তবিয়তে। আর এর ফলে ছোঁয়া হয়ে যায় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর আকাশী সাদা জার্সি গায়ে ১৪৭ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও।
মেসির রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে শুরু থেকেই সপ্রতিভ ছিল আলবিসেলেস্তেরা। যদিও প্যারাগুয়ে রক্ষণের ভুলে, তবু সার্জিও আগুয়েরোর সামনে সুযোগ এসেছিল দলকে এগিয়ে দেয়ার। কিন্তু দুই ডিফেন্ডারের ভুলে ম্যাচের অষ্টম মিনিটে পাওয়া সুযোগটা নষ্ট করেন চলতি টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা বার্সেলোনা স্ট্রাইকার।
এর আগে ম্যাচের একাদশে পরিবর্তন এসেছিল ছয়টা। রক্ষণ, মাঝমাঠ আর আক্রমণে দুটো করে পরিবর্তন এনেছিলেন কোচ স্ক্যালোনি। তার দুজনের যুগলবন্দিতেই মিলল প্রথম গোলটা। মেসির পাস থেকে আনহেল ডি মারিয়া বলটা পান বক্সের একটু বাইরে। তার থ্রু থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যাওয়া গোমেজ প্রথম ছোঁয়াতেই করেন দারুণ এক চিপ, তাতেই গোল। আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ১০ মিনিটেই।
আর্জেন্টিনা বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছে বটে, কিন্তু সুযোগ সৃষ্টি করার চেয়ে সুযোগ হজমই যেন করছিল বেশি। তারপরও অবশ্য আরও একটা গোল পেয়েই গিয়েছিল বিরতির আগে। বা প্রান্ত থেকে আসা পাপু গোমেজের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেয় প্যারাগুয়ে। কিন্তু অফসাইডের খড়গে তা বাতিল হয়। কারণ এর বিল্ডআপে আনহেল ডি মারিয়া যখন শট করেছিলেন, অফসাইডে থেকে গোলরক্ষকের দৃষ্টি আটকে দিচ্ছিলেন মেসি। ফলে বিরতির আগে আরও একটা গোল পাওয়া হয়নি আলবিসেলেস্তেদের।
বিরতির আগে যাও কিছু আক্রমণ করেছে কোচ স্ক্যালোনির শিষ্যরা। বিরতির পর থিতিয়ে পড়েছে সেটাও। আনহেল রোমেরো, আলমিরনরা রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষাই নিচ্ছিলেন মেসিদের রক্ষণের। তবে সে পরীক্ষায় ভালোভাবেই উতরে গেছে দলটি। ফলে মাঠ ছেড়েছে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয় নিয়েই।
দিনের শুরুর ম্যাচে উরুগুয়ে আর চিলির ম্যাচ ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।
অ্যালেক্সিস সানচেজের গোলে এগিয়ে গিয়েও আর্তুরো ভিদালের আত্মঘাতী গোলে জয়বঞ্চিত থাকে চিলি। এর পরের ম্যাচে মেসিদের এই জয় আর্জেন্টিনাকে তুলে দিয়েছে কোপা আমেরিকার ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে। আর তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তারা নিশ্চিত করে ফেলেছে প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল।
এই জয়ের পর ৩ ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে মোট ৭ পয়েন্ট অর্জন করেছে আর্জেন্টিনা। পাঁচ দলের গ্রুপে প্রতি দল ম্যাচ পাবে চারটি করে। এরপর সর্বনিম্ন অবস্থানে থাকা ১টি দল বিদায় নেবে গ্রুপ পর্ব শেষে। বাকি চার দল জায়গা করে নেবে কোয়ার্টার ফাইনালে।
আগামী ২৯ জুন নিজেদের শেষ ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবেন মেসিরা। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করলেও এখনো গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত হয়নি দলটির। এখন পর্যন্ত অধরা লক্ষ্যটা অর্জন করাই যে সেদিন হবে আলবিসেলেস্তেদের লক্ষ্য, তা বলাই বাহুল্য।
এসএম/ডিএএম//
Leave a Reply