নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
উত্তরার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে নাসির ও অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় নাসিরের সঙ্গে থাকা অল্পবয়সী তিন নারীকেও গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে অমির গার্লফ্রেন্ড স্নিগ্ধা ও নাসিরের সঙ্গী লিপি ও সুমি রয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনার সয়ম ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ-বিয়ার ও এক হাজার পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে।
পুলিশ বলছে, এই বাসায় প্রতিদিন ডিজে পার্টির আয়োজন করতেন নাসির। উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করানো হতো। বাড়িটিতে যাতায়াত ছিল অনেকের।
গ্রেফতার নারীদের দেখানো জায়গা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ-বিয়ার ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যাদের গ্রেফতার করেছি, তাদের কাজই মদের ব্যবসা করা। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন নাসির। তিনি এই কাজই করেন। তিনি বিভিন্ন ছোট ছোট মেয়েকে রক্ষিতা রাখেন। আমরা এখনও তদন্ত করছি।’
হারুন-অর-রশিদ বলেন, এটা পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার অমির বাসা। পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে নাসির তার তিনজন নারী সঙ্গী নিয়ে এই বাসায় নাসির পালিয়ে ছিলেন। মাদক রাখার অভিযোগে সেই তিনজনকেও আমরা গ্রেফতার করেছি।
পরীমনি ক্লাবের সদস্য না হয়ে সেখানে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার বলেন, সে (পরীমনি) স্বনামধন্য নায়িকা। ওখানে (বোট ক্লাব) যেতেই পারেন। গেলে যে তাকে ওখানে হ্যারেজ (হয়রানি) করবে সেটা ঠিক না। আসলে কী ঘটেছে তা বিস্তারিত তদন্ত করে বলতে পারব।
তিনি বলেন, এই ঘটনা নিয়ে রোববার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আমরা অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তবে যেহেতু রাতে মামলা হয়নি, তাই আমরা অ্যাকশনে যাইনি। সাভার থানায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করি।
হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণচেষ্টার মামলায় নাসিরকে সাভার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে বর্তমানে মাদক উদ্ধারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানান হারুন।
এর আগে পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনাটি কারও নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন তিনি। সেখানে এই ঘটনার বিচার চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এর পরের দিন রোববার তিনি বনানীর বাসায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে ঢাকা বোট ক্লাবের নির্বাহী সদস্য ও ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের নাম উল্লেখ করেন।
পরীমনির এ ঘটনায় দেশের শোবিজেসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। জাতীয় সংসদেও বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ এ নিয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে এবং পরীমনির নিরাপত্তা প্রশ্নে কথা বলেছেন।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও এ বিষয়ে ব্যাপক তৎপর রয়েছেন।
এসএম//
Leave a Reply