Dhaka ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৪০ তম শাহাদাতবার্ষিকী কাল

  • Update Time : ০৮:৩২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১
  • / ০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কাল রোববার ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাতবার্ষিকী।

১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে।

এবছরও ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

প্রতিবছরই দিবসটি উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি। এতে জিয়াউর রহমানের কর্মময় বর্ণাঢ্য জীবনের নানা দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শহীদ জিয়ার সহচরসহ দলের সিনিয়র নেতারা। তবে এবার এই দিবসটি এসেছে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে।

বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে এখন প্রাণঘাতি বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এবছরে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও এসেছে পরিবর্তন। অন্যান্য বছর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাহাদাতবার্ষিকী পালন করা হলেও এবার কোনো সমাবেশ বা বড় পরিসরে অনুষ্ঠান থাকছে না। অনলাইনে চলবে ভার্চুয়াল আলোচনা। গত বছরও করোনা সংক্রমণ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে আয়োজন হয়।

এছাড়া এখন শহীদ জিয়া পত্নী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা,নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল।

জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন।

শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামেই কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ ভাগের পর করাচিতে চলে যান।

শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে।

সৈনিকজীবনে জিয়াউর রহমান যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে নমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরোত্তম খেতাব লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারিদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল গোটা জাতি। এসময় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।

গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান।

দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীদেরও জায়গা দেয়া হয়। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন।

মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন জিয়াউর রহমান।

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন।
জিয়ার মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত জানাযায় স্মরণকালের সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ২৭ মে দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকীর কর্মসূচির কথা জানান দলের দফতরের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

সংবাদ সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘৩০ মে বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত শোকের একটি দিন। এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান দেশি-বিদেশি চক্রান্তে নিহত হয়েছিলেন। যিনি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের নানা ক্রান্তিলগ্নে নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বীর দর্পে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নজির স্থাপন করেছেন।’

এমরান সালেহ জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ১৫ দিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-২৯ মে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর ভার্চুয়াল আলোচনা সভা। ৩০ মে ও ৩১ মে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাচ ধারণ এবং ঢাকা মহানগরীর ৪০টি স্থানে দরিদ্র মানুষদের খাবার দেয়া হবে।

এছাড়া, জিয়ার জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী হবে। ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। ৯ জুন জিয়ার ওপরে প্রকাশিত বইয়ের প্রদর্শনী। ১ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এমএইচবি//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৪০ তম শাহাদাতবার্ষিকী কাল

Update Time : ০৮:৩২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কাল রোববার ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাতবার্ষিকী।

১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে।

এবছরও ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

প্রতিবছরই দিবসটি উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি। এতে জিয়াউর রহমানের কর্মময় বর্ণাঢ্য জীবনের নানা দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শহীদ জিয়ার সহচরসহ দলের সিনিয়র নেতারা। তবে এবার এই দিবসটি এসেছে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে।

বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে এখন প্রাণঘাতি বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এবছরে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও এসেছে পরিবর্তন। অন্যান্য বছর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাহাদাতবার্ষিকী পালন করা হলেও এবার কোনো সমাবেশ বা বড় পরিসরে অনুষ্ঠান থাকছে না। অনলাইনে চলবে ভার্চুয়াল আলোচনা। গত বছরও করোনা সংক্রমণ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে আয়োজন হয়।

এছাড়া এখন শহীদ জিয়া পত্নী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা,নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল।

জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন।

শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামেই কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ ভাগের পর করাচিতে চলে যান।

শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে।

সৈনিকজীবনে জিয়াউর রহমান যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে নমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরোত্তম খেতাব লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারিদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল গোটা জাতি। এসময় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।

গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান।

দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীদেরও জায়গা দেয়া হয়। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন।

মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন জিয়াউর রহমান।

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন।
জিয়ার মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত জানাযায় স্মরণকালের সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ২৭ মে দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকীর কর্মসূচির কথা জানান দলের দফতরের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

সংবাদ সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘৩০ মে বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত শোকের একটি দিন। এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান দেশি-বিদেশি চক্রান্তে নিহত হয়েছিলেন। যিনি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের নানা ক্রান্তিলগ্নে নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বীর দর্পে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নজির স্থাপন করেছেন।’

এমরান সালেহ জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ১৫ দিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-২৯ মে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর ভার্চুয়াল আলোচনা সভা। ৩০ মে ও ৩১ মে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাচ ধারণ এবং ঢাকা মহানগরীর ৪০টি স্থানে দরিদ্র মানুষদের খাবার দেয়া হবে।

এছাড়া, জিয়ার জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী হবে। ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। ৯ জুন জিয়ার ওপরে প্রকাশিত বইয়ের প্রদর্শনী। ১ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এমএইচবি//