Dhaka ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

বাংলাদেশের স্মরণীয় সিরিজ জয়

  • Update Time : ১২:২৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মে ২০২১
  • / ১ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক :
২৫ মে ২০২১ ক্রিকেট ইতিহাসের একটি রঙ্গিন দিন টিম বাংলাদেশের।

ব্যাটিং বিপর্যয় কিংবা বৃষ্টি, শঙ্কার মেঘ উড়াউড়ি করলেও শেষটা রঙীন।

মুশফিকের চোখজুড়ানো দায়িত্বশীল সেঞ্চুরি, সাথে বোলারদের সমন্বিত প্রচেষ্টা। সব মিলিয়ে বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনেও চওড়া হাসি টাইগারদের। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা উড়ে গেল ১০৩ রানে। বৃষ্টি আইনে দারুণ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এটি প্রথম কোনো সিরিজ জয়।

টানা দুই জয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে উঠে এল তামিম বিগ্রেড। পাঁচ জয়ে ৫০ পয়েন্ট বাংলাদেশের। সেখানে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।

২০০২ থেকে শ্রীলঙ্কার সাথে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের পথচলা। এর আগে আটবারের মোকাবেলায় ছয়বারই সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ, পাঁচবার হোয়াইটওয়াশ (৩-০)। দুবার ড্র।

শুধু ওয়ানডে নয়, ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল না বাংলাদেশের। এবার ঘরের মাটিতে হলো সেই স্বপ্নপূরুণ।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকের দৃঢ়চেতা সেঞ্চুরির উপর ভর করে বাংলাদেশ করে ২৪৬ রান। জবাবে শ্রীলঙ্কা করতে পারে ৯ উইকেটে ১৪১ রান। দারুণ শতকের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহীম।

আগামী শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। বাংলাদেশের সামনে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ধীর গোছের ছিল শ্রীলঙ্কার। তাতে অবশ্য রক্ষা হয়নি। লঙ্কান শিবিরে বল হাতে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত পেসার শরিফুল ইসলাম। দলীয় ২৪ রানে তিনি ফেরান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক কুশল পেরেরাকে। শরিফুলের বলে ক্যাচ নেন তামিম। ১৫ বলে ১৪ রানে ফেরেন পেরেরা।

এরপর মোস্তাফিজের আগমন। তিনি ফেরান আরেক ওপেনার গুনাথিলাকাকে। এবার ক্যাচ নেন সাকিব। ৪৬ বলে ২৪ রান করে ফেরেন লঙ্কান ওপেনার। ধারাবাহিক উইকেট নেয়ার মিছিলে এরপর নাম লেখান সাকিব আল হাসান। তিনি ফেরান ওয়ান ডাউনে নামা পাথুন নিশাঙ্কাকে। ২০ রান করা নিশাঙ্কার ক্যাচটি লুফে নেন তামিম ইকবাল।

দলীয় ৭৭ রানে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ কুশল মেন্ডিস (১৫)। টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর আর সোজা হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মিরাজ, সাকিব ও মোস্তাফিজের যৌথ আক্রমণে নুইয়ে পড়ে দলটি। একে একে বিদায় নেন ধনাঞ্জয়া, বান্দারা, শানাকা। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলা হাসারাঙ্গাকে (৬) আউট করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

জয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন বাংলাদেশ। ৩৮ ওভারে ১২৬ রান শ্রীলঙ্কার, উইকেট নেই ৯টি। তখনই আবার হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টিরপর ম্যাচ নেমে আসে ৪০ ওভারে। দুই ওভারে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ১১৯। যা ছিল অসম্ভব। পারেনি লঙ্কানরা। সিরিজ জয়ের সুখকর অনুভূতি নিয়ে মাঠ ছাড়ে তামিম বাহিনী। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ও মোস্তাফিজ তিনটি, সাকিব দুটি ও শরিফুল এক উইকেট নেন।

এর আগে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল বাজে। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন তামিম ইকবাল (১৩) ও সাকিব আল হাসান (০)।

প্রথম ম্যাচে তামিম করেছিলেন ফিফটি। দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুটা দারুণ। প্রথম ওভারেই উদানার বলে তামিম হাকান তিনটি বাউন্ডারি। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই আউট তামিম। চামিরার বলে হয়ে যান এলবি। যদিও আম্পায়ার প্রথমে আউটের ইশারা দেননি। কিন্তু রিভিউতে সফল লঙ্কানরা। ৬ বলে তিন চারে ১৩ রানে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ওয়ান ডাউনে নামা সাকিব আল হাসানও টিকতে পারেননি। চামিরার একই ওভারের চতুর্থ বলে তিনি এলবিডব্লিউ। এবার আম্পায়ার সরাসরি আঙুল তোলেন। রিভিউ নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি সাকিব। ৩ বলে রানের খাতা শূন্য রেখেই সাজঘরে ফেরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দায়িত্বটা ভালোমতো পালন করতে পারেননি লিটন দাস। অথচ সুযোগ ছিল তার সামনে। ২৫ রান করে তিনি সান্দাকানের শিকার। ৪২ বলের ইনিংসে লিটনের চার মাত্র দুটি।

মিঠুনের পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া মোসাদ্দেকও হেঁটেছেন উল্টো পথে। ১২ বলে এক চারে ১০ রান করে তিনিও সান্দাকানের শিকার।

৭৪ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন অনেকটাই বিপদে। ওভার মাত্র ১৫.৪। এমন অবস্থায় প্রথম ম্যাচের মতো হাল ধরেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ১০৮ বলে ৮৭ রানের জুটি দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করে।

৫৮ বলে ৪১ রান করা মাহমুদউল্লাহকে আউট করে জুটি ভাঙেন সান্দাকান। এরপর দ্রুত পতন দুটি উইকেটের। ৯ বলে ১০ রান করা আফিফ উদানার বলে ক্যাচ দেন নিশাঙ্কার হাতে। দুই বলে রানের খাতা খুলতে না পারা মিরাজ পান ডাক। ধনাঞ্জয়ের বলে হন এলবিডব্লিউ।

৪১তম ওভার শেষে বাংলাদেশের রান তখন সাত উইকেটে ১৯৬। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪১তম ফিফটি করে অপরাজিত মুশফিক। বৃষ্টির আগ পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত রান ৮৫, বল খরচ করেছেন ১০৬টি, চারের মার মাত্র তিনটি।

২৫ মিনিট পর শুরু হয় আবার খেলা। বেশিক্ষণ হয়নি খেলা। মাত্র আড়াই ওভার। আবার শুরু হয় বৃষ্টি। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে তখন ছিলেন মুশফিক। তার ব্যক্তিগত রান ছিল ৯৬। ৩৮ মিনিট পর আবার খেলা শুরু। ব্যক্তিগত ৯৯ রানের মাথায় চার হাকিয়ে সেঞ্চুরি পূরুণ করেন মুশফিক। চামিরার বলে বাউন্ডারি হাকানোর পর তেমন উদযাপন ছিল না মুশফিকের। ব্যাট-হেলমেট তুলে শুধু একটু তাকালেন আকাশের দিকে।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মুশফিকের এটি অষ্টম শতক। ১১৪ বলে ছয়টি চারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

দলীয় ২৩২ রানের মাথায় রান আউট সাইফউদ্দিন। ৩০ বলে ১১ রান করেন আহত এই পেস অলরাউন্ডার। বল হেলমেটে লাগায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নেয়া হয় হাসপাতালে। তার কনকাশন বদলি হিসেবে বল হাতে মাঠে নামেন তাসকিন আহমেদ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটি প্রথম কনকাশন বদলি।

অভিষেকে নেমে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান পেসার শরিফুল ইসলাম। উদানার বলে তিনি ক্যাচ তুলে দেন উইকেটের পেছনে পেরেরার গ্লাভসে। শেষ জুটিতে মুশফিকের সঙ্গে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

৪৯তম ওভারে চামিরার প্রথম বলে বান্দারার হাতে ক্যাচ দেন মুশফিক। শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ১২৭ বলে ১২৫ রান করেন মুশফিক।

দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসে মুশফিক মারেন ১০টি চার, নেই কোনো ছক্কা। বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে চামিরা ও সান্দাকান তিনটি, উদানা দুটি, হাসারাঙ্গা এক উইকেট নেন।

এমকেএম/এসএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাংলাদেশের স্মরণীয় সিরিজ জয়

Update Time : ১২:২৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মে ২০২১

স্পোর্টস ডেস্ক :
২৫ মে ২০২১ ক্রিকেট ইতিহাসের একটি রঙ্গিন দিন টিম বাংলাদেশের।

ব্যাটিং বিপর্যয় কিংবা বৃষ্টি, শঙ্কার মেঘ উড়াউড়ি করলেও শেষটা রঙীন।

মুশফিকের চোখজুড়ানো দায়িত্বশীল সেঞ্চুরি, সাথে বোলারদের সমন্বিত প্রচেষ্টা। সব মিলিয়ে বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনেও চওড়া হাসি টাইগারদের। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা উড়ে গেল ১০৩ রানে। বৃষ্টি আইনে দারুণ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এটি প্রথম কোনো সিরিজ জয়।

টানা দুই জয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে উঠে এল তামিম বিগ্রেড। পাঁচ জয়ে ৫০ পয়েন্ট বাংলাদেশের। সেখানে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।

২০০২ থেকে শ্রীলঙ্কার সাথে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের পথচলা। এর আগে আটবারের মোকাবেলায় ছয়বারই সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ, পাঁচবার হোয়াইটওয়াশ (৩-০)। দুবার ড্র।

শুধু ওয়ানডে নয়, ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল না বাংলাদেশের। এবার ঘরের মাটিতে হলো সেই স্বপ্নপূরুণ।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকের দৃঢ়চেতা সেঞ্চুরির উপর ভর করে বাংলাদেশ করে ২৪৬ রান। জবাবে শ্রীলঙ্কা করতে পারে ৯ উইকেটে ১৪১ রান। দারুণ শতকের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহীম।

আগামী শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। বাংলাদেশের সামনে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ধীর গোছের ছিল শ্রীলঙ্কার। তাতে অবশ্য রক্ষা হয়নি। লঙ্কান শিবিরে বল হাতে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত পেসার শরিফুল ইসলাম। দলীয় ২৪ রানে তিনি ফেরান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক কুশল পেরেরাকে। শরিফুলের বলে ক্যাচ নেন তামিম। ১৫ বলে ১৪ রানে ফেরেন পেরেরা।

এরপর মোস্তাফিজের আগমন। তিনি ফেরান আরেক ওপেনার গুনাথিলাকাকে। এবার ক্যাচ নেন সাকিব। ৪৬ বলে ২৪ রান করে ফেরেন লঙ্কান ওপেনার। ধারাবাহিক উইকেট নেয়ার মিছিলে এরপর নাম লেখান সাকিব আল হাসান। তিনি ফেরান ওয়ান ডাউনে নামা পাথুন নিশাঙ্কাকে। ২০ রান করা নিশাঙ্কার ক্যাচটি লুফে নেন তামিম ইকবাল।

দলীয় ৭৭ রানে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ কুশল মেন্ডিস (১৫)। টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর আর সোজা হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মিরাজ, সাকিব ও মোস্তাফিজের যৌথ আক্রমণে নুইয়ে পড়ে দলটি। একে একে বিদায় নেন ধনাঞ্জয়া, বান্দারা, শানাকা। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলা হাসারাঙ্গাকে (৬) আউট করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

জয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন বাংলাদেশ। ৩৮ ওভারে ১২৬ রান শ্রীলঙ্কার, উইকেট নেই ৯টি। তখনই আবার হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টিরপর ম্যাচ নেমে আসে ৪০ ওভারে। দুই ওভারে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ১১৯। যা ছিল অসম্ভব। পারেনি লঙ্কানরা। সিরিজ জয়ের সুখকর অনুভূতি নিয়ে মাঠ ছাড়ে তামিম বাহিনী। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ও মোস্তাফিজ তিনটি, সাকিব দুটি ও শরিফুল এক উইকেট নেন।

এর আগে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল বাজে। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন তামিম ইকবাল (১৩) ও সাকিব আল হাসান (০)।

প্রথম ম্যাচে তামিম করেছিলেন ফিফটি। দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুটা দারুণ। প্রথম ওভারেই উদানার বলে তামিম হাকান তিনটি বাউন্ডারি। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই আউট তামিম। চামিরার বলে হয়ে যান এলবি। যদিও আম্পায়ার প্রথমে আউটের ইশারা দেননি। কিন্তু রিভিউতে সফল লঙ্কানরা। ৬ বলে তিন চারে ১৩ রানে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ওয়ান ডাউনে নামা সাকিব আল হাসানও টিকতে পারেননি। চামিরার একই ওভারের চতুর্থ বলে তিনি এলবিডব্লিউ। এবার আম্পায়ার সরাসরি আঙুল তোলেন। রিভিউ নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি সাকিব। ৩ বলে রানের খাতা শূন্য রেখেই সাজঘরে ফেরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দায়িত্বটা ভালোমতো পালন করতে পারেননি লিটন দাস। অথচ সুযোগ ছিল তার সামনে। ২৫ রান করে তিনি সান্দাকানের শিকার। ৪২ বলের ইনিংসে লিটনের চার মাত্র দুটি।

মিঠুনের পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া মোসাদ্দেকও হেঁটেছেন উল্টো পথে। ১২ বলে এক চারে ১০ রান করে তিনিও সান্দাকানের শিকার।

৭৪ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন অনেকটাই বিপদে। ওভার মাত্র ১৫.৪। এমন অবস্থায় প্রথম ম্যাচের মতো হাল ধরেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ১০৮ বলে ৮৭ রানের জুটি দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করে।

৫৮ বলে ৪১ রান করা মাহমুদউল্লাহকে আউট করে জুটি ভাঙেন সান্দাকান। এরপর দ্রুত পতন দুটি উইকেটের। ৯ বলে ১০ রান করা আফিফ উদানার বলে ক্যাচ দেন নিশাঙ্কার হাতে। দুই বলে রানের খাতা খুলতে না পারা মিরাজ পান ডাক। ধনাঞ্জয়ের বলে হন এলবিডব্লিউ।

৪১তম ওভার শেষে বাংলাদেশের রান তখন সাত উইকেটে ১৯৬। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪১তম ফিফটি করে অপরাজিত মুশফিক। বৃষ্টির আগ পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত রান ৮৫, বল খরচ করেছেন ১০৬টি, চারের মার মাত্র তিনটি।

২৫ মিনিট পর শুরু হয় আবার খেলা। বেশিক্ষণ হয়নি খেলা। মাত্র আড়াই ওভার। আবার শুরু হয় বৃষ্টি। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে তখন ছিলেন মুশফিক। তার ব্যক্তিগত রান ছিল ৯৬। ৩৮ মিনিট পর আবার খেলা শুরু। ব্যক্তিগত ৯৯ রানের মাথায় চার হাকিয়ে সেঞ্চুরি পূরুণ করেন মুশফিক। চামিরার বলে বাউন্ডারি হাকানোর পর তেমন উদযাপন ছিল না মুশফিকের। ব্যাট-হেলমেট তুলে শুধু একটু তাকালেন আকাশের দিকে।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মুশফিকের এটি অষ্টম শতক। ১১৪ বলে ছয়টি চারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

দলীয় ২৩২ রানের মাথায় রান আউট সাইফউদ্দিন। ৩০ বলে ১১ রান করেন আহত এই পেস অলরাউন্ডার। বল হেলমেটে লাগায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নেয়া হয় হাসপাতালে। তার কনকাশন বদলি হিসেবে বল হাতে মাঠে নামেন তাসকিন আহমেদ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটি প্রথম কনকাশন বদলি।

অভিষেকে নেমে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান পেসার শরিফুল ইসলাম। উদানার বলে তিনি ক্যাচ তুলে দেন উইকেটের পেছনে পেরেরার গ্লাভসে। শেষ জুটিতে মুশফিকের সঙ্গে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

৪৯তম ওভারে চামিরার প্রথম বলে বান্দারার হাতে ক্যাচ দেন মুশফিক। শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ১২৭ বলে ১২৫ রান করেন মুশফিক।

দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসে মুশফিক মারেন ১০টি চার, নেই কোনো ছক্কা। বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে চামিরা ও সান্দাকান তিনটি, উদানা দুটি, হাসারাঙ্গা এক উইকেট নেন।

এমকেএম/এসএস//