সারাদেশ ডেস্ক :
সেনা অভ্যুত্থানের তিন মাস পরেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে মিয়ানমারে।
অপরদিকে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় জাতিসঙ্ঘের এক দূত দেশটিতে ‘স্থবিরতার’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। শনিবার মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়সহ সারাদেশে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভকারী সামরিক শাসন প্রত্যাহার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সেনা অভ্যুত্থানের জেরে বন্দী সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে ও শনিবার ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর এখনো পাওয়া যায়নি। সামরিক জান্তা বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে বোমা পাতায় বিক্ষোভকারীদের দায়ী করছে।
মিয়ানমারে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টেন শ্রেনার বার্গনার বলেছেন, সামরিক অভ্যুত্থানে দেশটিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার অভাবে সহিংসতা বেড়েই চলছে এবং দেশটির শাসনব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে তিনি এই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর দমনের অংশ হিসেবে প্রাণঘাতি শক্তির ব্যবহার, গ্রেফতারি ও নির্যাতনের মধ্যেও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন চলে আসায় রাষ্ট্রীয় প্রশাসন স্থবির হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে।’
মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত সাত শ’ ৫৯ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে বন্দী হয়েছেন মোট চার হাজার পাঁচ শ’ ৮৪ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন তিন হাজার চার শ’ ৮৫ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো এক হাজার তিন শ’ ১৬ জনের নামে।
১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে।
সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী। সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এমএম//
Leave a Reply