দিদারুল আলম :
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি আমাদের দেশসহ চিরচেনা বিশ্বকে আমূল পরিবর্তন করে ফেলেছে।
আবারো প্রাণবন্ত জীবন ফিরে পেতে এবং
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় কার্যকর টিকা ও ঔষধ আবিস্কারে ক্ষমতাধর ও ধনী রাস্ট্র থেকে শুরু করে স্বল্পোন্নত দেশও চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কিছু কার্যকর টিকা ও ঔষধ বিভিন্ন দেশে মানুষ গ্রহণ করছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের এ নিয়ে রিসার্চের অন্ত নেই।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশ থেকে এই প্রানঘাতি ভাইরাসের সৃষ্টি তারপর সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মাঝে সংক্রমিত হতে থাকে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় ৩২ লাখ মানুষ মারা গেছেন এর মধ্যে বাংলাদেশে ১১ হাজারেরও বেশী। এ সংখ্যা বাস্তবে আরো বেশি হতে পারে। আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ। এখনও আক্রান্ত অবস্থায় সুস্থতার জন্য লড়াই করছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে শুরু থেকেই সোচ্চার রযেছেন কুমিল্লা বার্ডের উপ-পরিচালক কাজী সোনিয়া রহমান। করোনা সংক্রমণ মোকাবেলা বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের উৎসাহ ও উজ্জীবিত রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময়োপযোগী ভূমিকা রেখে চলেছেন।
তার অভিজ্ঞতা ও সচেতনতামূলক পরামর্শ তার ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে শেয়ার করেছেন। কাজী সোনিয়া রহমানের ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে নেয়া লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হল।
#করোনার_ঊর্ধ্বগতি_ও_আমাদের_করনীয়ঃ
সারা বিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশেও করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনার তান্ডবে মানুষ দিশেহারা। হাসপাতালে রোগীর ঠাই নেই, মসজিদকেও হাসপাতাল বানানো হচ্ছে। অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। স্বজনদের কান্না ও হাহাকারে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত। চারিদিকে লাশের পোঁড়া গন্ধ। গণদাহ করা হচ্ছে, অন্যদিকে দাফনের অপেক্ষায় লাশের দীর্ঘ সারি।
পাশের ঘরে আগুন লাগলে যেমন নিজের ঘর সুরক্ষিত থাকেনা, তেমনি আমাদের দেশও সুরক্ষিত নয়। প্রতিবেশি ভারতের ঢেউ আমাদের দেশেও লাগলো বলে! ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যশোরে ভারত ফেরত দশ জন করোনা রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। কাজেই আমাদের দেশেও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ মুহুর্তে করোনার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশে লকডাউন চলছে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে সীমিত আকারে দোকানপাট এবং শপিংমল খুলে দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় নিজের সুরক্ষা নিজেকেই করতে হবে। অন্যথায় আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে বাধ্য। কোন মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। একটি মৃত্যু একটি পরিবারের সারা জীবনের কান্না। করোনার যে ভ্যারিয়েন্টে এখন মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তার সংক্রমণের তীব্রতা অনেক বেশী এবং এর থেকে বেঁচে গেলেও দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা ভোগ করতে হবে দীর্ঘদিন ।
বেঁচে থাকলে অনেক ঈদ আসবে জীবনে, অনেক শপিং করা যাবে, জরুরী প্রয়োজনে অনলাইনেও কেনা-কাটা করা যেতে পারে ।
আসুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। নিজে নিরাপদ থাকি এবং অন্যকেও নিরাপদ রাখি। করোনার প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষ রোগ-শোক এবং খাদ্যাভাবে ভুগছে। সরকার তার সাধ্যমত চেষ্টা করছে। আসুন আমরা আমাদের সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়াই। আসুন এ রমজানে সবার জন্য প্রার্থনা করি। আল্লাহ আমাদের এ মহামারী থেকে রক্ষা করুন।
ডিএএম//
Leave a Reply