Dhaka ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের রায়ে বাংলাদেশের আইন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকদের সন্তোষ প্রকাশ

  • Update Time : ১২:৪৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১
  • / ২ Time View

সারাদেশ ডেস্ক :
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে যে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের রাজনীতিক, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ এবং আইন বিশেষজ্ঞরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। একটি ঐতিহাসিক রায়। আমরা একে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, বর্ণবৈষম্য নিরসনে এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

তার পূর্বসূরি মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বিচারটি হয়েছে। আমাদের যেমন ধারনা ছিলো এখানে শুধুমাত্র জনগণের বা পাবলিক অপিনিয়নের চাপে আদালত বিচার করছে, তা কিন্তু নয়। যেভাবে ফ্লয়েডকে কাঁধের উপর পা দিয়ে চেপে ধরা হয়েছে, একারণেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং বৈজ্ঞানিকভাবেও সেটা প্রমাণিত হয়েছে। একারণে জুরি এবং আদালত একই ভাষ্যে উপনীত হয়েছে। পুলিশ অফিসার দায়ী। সে নর হত্যা করেছে। এখানে ন্যায় বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার কোনো বিন্দুমাত্র সুযোগ নাই। এতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে।

তিনি বলেন, এখানে আমদের অনেক কিছু শিখার আছে। একটা হচ্ছে যে পুলিশ হলেই যে, যেনোতেনোভাবে একজন অপরাধীর সাথে ব্যবহার করবে এবং সেটাকে সে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে সরল বিশ্বাসে সে এমনটা করেছে বলে এর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আশা করি মানবাধিকারের এই দিকটি আমাদের বিচার ব্যবস্থা, আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকলেই এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন এবং সেইভাবে তারা সাধারণ জনগণের সঙ্গে আচরণ করবেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মানুষকে রক্ষার বদলে হত্যা করা রাষ্ট্রের এবং সমাজের জন্য দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক। আইনের শাসন ও জাত-পাত সমতার সমাজ প্রতিষ্ঠায় এই রায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। শুধু আমেরিকায় নয়, গোটা পৃথিবীতে এটি শিক্ষনীয় রায় হিসেবে থাকবে। এত বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ সেই উদাহরণও সৃষ্টি হলো।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ফ্লয়ডের হত্যাকান্ড অত্যন্ত মর্মান্তিক। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর এরকম শতশত হত্যাকান্ড ঘটে। সেগুলোর বিচার হয় না। ফ্লয়েডের হত্যাকান্ড যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নয় সারাবিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। এই বিচার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। শুধু জর্জ ফ্লয়ডের বিচার নয় এর পাশাপাশি অন্যান্য বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের বিচার হলে এটা প্রমাণ হবে যে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অনেক বেশী সচেতন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড.কাজী আকতার হামিদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও যে জবাবদিহিতা থাকা দরকার সেটিই এই রায়ের মাধ্যমে পাওয়া গেলো। তিনি বলেন, রায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয় পুরো বিশ্বের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পীড়াদায়ক ছিল। এটি বিশ্বব্যাপী আলোচিত ঘটনা। এ ঘটনায় সেখানে বর্ণবাদের সুস্পষ্ট প্রকাশ। ঘটনাটি ঘটার পর বর্ণবাদ ও মানবাধিকার নিয়ে শংকিত ছিলাম। রায়টি ঘোষণার পর স্বস্তি পাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সেখানে বিদ্যমান বর্ণবাদ ও বৈষম্য নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে নিতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে, যেটি ইতিবাচক। তিনি বলেন, প্রত্যেক সোসাইটিতে খারাপ কার্যক্রম রয়েছে। তাই তা মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে সরকারগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই রায় তারই প্রতিফলন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে আর খাঁন রবিন বলেন, রায়ে প্রমাণ হলো আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। যে দেশের বিচার ব্যবস্থা যত নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও শক্তিশালী সে দেশ তত বেশি উন্নত এবং সেখানে সুশাসনও তত বেশি দৃঢ়। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন নীতি এ রায়ে প্রতিফলন ঘটেছে। রায়টি বিশ্বের জন্য অনুসরণীয়। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয় এটিও রায়টির স্পিরিট। (সূত্র:বাসস)

এমএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের রায়ে বাংলাদেশের আইন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকদের সন্তোষ প্রকাশ

Update Time : ১২:৪৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১

সারাদেশ ডেস্ক :
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে যে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের রাজনীতিক, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ এবং আইন বিশেষজ্ঞরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। একটি ঐতিহাসিক রায়। আমরা একে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, বর্ণবৈষম্য নিরসনে এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

তার পূর্বসূরি মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বিচারটি হয়েছে। আমাদের যেমন ধারনা ছিলো এখানে শুধুমাত্র জনগণের বা পাবলিক অপিনিয়নের চাপে আদালত বিচার করছে, তা কিন্তু নয়। যেভাবে ফ্লয়েডকে কাঁধের উপর পা দিয়ে চেপে ধরা হয়েছে, একারণেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং বৈজ্ঞানিকভাবেও সেটা প্রমাণিত হয়েছে। একারণে জুরি এবং আদালত একই ভাষ্যে উপনীত হয়েছে। পুলিশ অফিসার দায়ী। সে নর হত্যা করেছে। এখানে ন্যায় বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার কোনো বিন্দুমাত্র সুযোগ নাই। এতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে।

তিনি বলেন, এখানে আমদের অনেক কিছু শিখার আছে। একটা হচ্ছে যে পুলিশ হলেই যে, যেনোতেনোভাবে একজন অপরাধীর সাথে ব্যবহার করবে এবং সেটাকে সে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে সরল বিশ্বাসে সে এমনটা করেছে বলে এর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আশা করি মানবাধিকারের এই দিকটি আমাদের বিচার ব্যবস্থা, আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকলেই এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন এবং সেইভাবে তারা সাধারণ জনগণের সঙ্গে আচরণ করবেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মানুষকে রক্ষার বদলে হত্যা করা রাষ্ট্রের এবং সমাজের জন্য দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক। আইনের শাসন ও জাত-পাত সমতার সমাজ প্রতিষ্ঠায় এই রায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। শুধু আমেরিকায় নয়, গোটা পৃথিবীতে এটি শিক্ষনীয় রায় হিসেবে থাকবে। এত বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ সেই উদাহরণও সৃষ্টি হলো।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ফ্লয়ডের হত্যাকান্ড অত্যন্ত মর্মান্তিক। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর এরকম শতশত হত্যাকান্ড ঘটে। সেগুলোর বিচার হয় না। ফ্লয়েডের হত্যাকান্ড যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নয় সারাবিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। এই বিচার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। শুধু জর্জ ফ্লয়ডের বিচার নয় এর পাশাপাশি অন্যান্য বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের বিচার হলে এটা প্রমাণ হবে যে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অনেক বেশী সচেতন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড.কাজী আকতার হামিদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও যে জবাবদিহিতা থাকা দরকার সেটিই এই রায়ের মাধ্যমে পাওয়া গেলো। তিনি বলেন, রায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয় পুরো বিশ্বের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পীড়াদায়ক ছিল। এটি বিশ্বব্যাপী আলোচিত ঘটনা। এ ঘটনায় সেখানে বর্ণবাদের সুস্পষ্ট প্রকাশ। ঘটনাটি ঘটার পর বর্ণবাদ ও মানবাধিকার নিয়ে শংকিত ছিলাম। রায়টি ঘোষণার পর স্বস্তি পাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সেখানে বিদ্যমান বর্ণবাদ ও বৈষম্য নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে নিতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে, যেটি ইতিবাচক। তিনি বলেন, প্রত্যেক সোসাইটিতে খারাপ কার্যক্রম রয়েছে। তাই তা মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে সরকারগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই রায় তারই প্রতিফলন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে আর খাঁন রবিন বলেন, রায়ে প্রমাণ হলো আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। যে দেশের বিচার ব্যবস্থা যত নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও শক্তিশালী সে দেশ তত বেশি উন্নত এবং সেখানে সুশাসনও তত বেশি দৃঢ়। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন নীতি এ রায়ে প্রতিফলন ঘটেছে। রায়টি বিশ্বের জন্য অনুসরণীয়। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয় এটিও রায়টির স্পিরিট। (সূত্র:বাসস)

এমএম//