সারাদেশ ডেস্ক :
মহামারি করোনাভাইরাসের টিকার ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চেষ্টা চলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা সত্বেও সেখান থেকে টিকা আনার জন্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ জন্য ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত দিল্লিতে গেছেন।
সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য প্রয়োজনীয় ডোজের চেয়ে ১২ লাখ ডোজ ঘাটতি রয়েছে। সরবরাহে অনিশ্চয়তার কারণে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া অব্যাহত রাখা হলেও এর হার কমে এসেছে। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা ছিল। কিন্তু গত দুই মাসে কোনো চালান আসেনি। কবে নাগাদ টিকার চালান আসতে পারে, তা কেউ বলতে পারছে না।
চুক্তির পর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে দুটি চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে। এ ছাড়া ভারত সরকার উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা যে সংখ্যক মানুষ নিয়েছেন, তাতে প্রায় ১২ লাখ ডোজ টিকার ঘাটতি থাকার কথা জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মো: খুরশিদ আলম বলেছেন, প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন, এখনকার টিকা থেকে বেশিরভাগকেই দেয়া সম্ভব হবে। তবে কিছুটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। টিকার সরবরাহ নিয়ে তাদের চিঠির জবাব দিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট, কিন্তু তাতে ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
মহাপরিচালক বলেন, ভ্যাকসিন যেটা আমরা কিনেছিলাম, সেটার চালানগুলো সময়মতো এসে পৌঁছায়নি। আমরা এ ব্যাপারে সিরাম এবং বেক্সিমকোকে চিঠি দিয়েছি। তারা জবাবে আমাদের জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন প্রস্তুত আছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পেলেই তারা আমাদের দিতে পারে। আমাদের সময় আছে। আশা করছি, এর মধ্যে কিছু না কিছু পেয়ে যাব।
বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি কোম্পানি বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি টিকা কেনার চুক্তি করেছিল। ওই অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা পাওয়ার কথা ছিল।
এখন বেক্সিমকোর পক্ষ থেকেও টিকা পাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সাথে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আগে থেকেই বিকল্প না রেখে একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করার কারণে বাংলাদেশ টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তায় পড়েছে। তবে এখন বিকল্প উপায় বা অন্য দেশ থেকে টিকা কীভাবে আনা যাবে, সেটা যাচাই করে সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রাশিয়া এবং চীন থেকে টিকা আনার জন্য তৎপরতা শুরু করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী যৌথভাবে তাদের স্পুটনিক টিকা বাংলাদেশ উৎপাদনের বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে।
এমএম//
Leave a Reply