1. newsroom@saradesh.net : News Room : News Room
  2. saradesh.net@gmail.com : saradesh :
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় কবরীর - সারাদেশ.নেট
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করতে চায় রোমানিয়া কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকা’র ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম আপিল বিভাগে ভ্যাকেশন জাজ মনোনীত আপিল বিভাগের জেষ্ঠ্য বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কারামুক্ত হলেন আইনজীবীদের নেতা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বেসিক প্রিন্সিপালস্ অফ ডেন্টাল ফার্ফাকোলজি এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ ‘ইতালিয়ান ভাষার’ ওপর পরীক্ষা উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত ইতালিয়ান ভাষা শিক্ষাকোর্স ও পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধন বুধবার ছোটবোনকে বঞ্চিত করে পিতার কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সব সম্পত্তি নিজ নামে করলো বড়বোন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কমিটি

পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় কবরীর

  • Update Time : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১

সারাদেশ ডেস্ক :
দীর্ঘ ৫৭ বছরের বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার
দুনিয়ার রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নিলেন ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত কবরী।

মহামারী করোনায় আক্রান্ত কিংবদন্তী অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরী পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নিলেন। রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার থেকে কবরী লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। এর আগে কয়েকদিন তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।

৭০ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায়ও ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসার পর থেকে কবরী হাসপাতালে ছিলেন।

গত শতকের ষাটের দশকে সেলুলয়েডের পর্দায় আবির্ভূত হয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে হিসেবে দর্শক হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নেয়া কবরী পরের অর্ধশতকে দুই শতাধিক সিনেমায় আলো ছড়িয়েছেন। শীর্ষ পাঁচ ঢাকাই নায়কের অভিষেক ঘটেছে তার হাত ধরেই।

কিংবদন্তী এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “কবরী ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলা চলচ্চিত্রের বিকাশে তার অবদান মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই অভিনেত্রী, নির্মাতা ও সাবেক এমপির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি কবরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও মন্ত্রী পরিষদের অন্যান্য সদস্য, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, শ্রেণী পেশার মানুষ কবরীর মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কবরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অগণিত মানুষ।

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্ম নেয়া মিনা পালের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্রে অভিষেকের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন কবরী। নায়ক রাজ হয়ে ওঠা রাজ্জাকের সঙ্গে কবরীর জুটির রসায়ন ঢাকাই ছবির ইতিহাসে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পায়

‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘অনির্বাণ’, ‘দীপ নেভে নাই’সহ অর্ধশতাধিক সিনেমার এই জুটিকে পরে ‘আমাদের সন্তান’ চলচ্চিত্রে বয়স্ক বাবা-মায়ের ভূমিকাতেও দর্শকরা দেখেছেন।

১৯৭৩ সালে ‘রংবাজ’ সিনেমায় দর্শক এক লাস্যময়ী কবরীকে আবিষ্কার করে। সেই চলচ্চিত্রের ‘সে যে কেন এল না, কিছু ভালো লাগে না’ গানটি এখনও বহু দর্শকের বুকে বাজে। ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘দীপ নেভে নাই’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, কিংবা পরে ‘সুজন সখী’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘সারেং বউ’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’সিনেমায় পর্দা মাতানো কবরীর ভাষায়, “জীবন হচ্ছে একটি চলচ্চিত্র। জীবন কিন্তু স্থিরচিত্র নয়।”

জীবন ও চলচ্চিত্রের বাঁকে বাঁকে নানা ঘটনার কথা কবরী নিজেই গ্রন্থিত করে কেরে গেছেন তার আত্মজৈবনিক রচনায়। ‘স্মৃতিটুকু থাক’ শিরোনামে কবরীর লেখা সেই বইটি ২০১৭ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশ করা হয়।

উত্তাল ১৯৭১-এ বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে ভারতের বড় বড় শহরে জনমত সংগঠন, সেলুলয়েডের বাইরে রাজনীতি জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতি, ঢাকাই সিনেমার সদর-অন্দরের পাশাপাশি এ শিল্পের উপর যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতির অভিঘাতের কথাও সেখানে দুই মলাটে বেঁধেছেন কিংবদন্তী এই অভিনেত্রী।

ষাট আর সত্তরের দশকের অনেক তরুণের ‘স্বপ্ন’ কবরীর স্বপ্ন কী ছিল? বালিকাবেলায় ভেবেছিলেন- বড় হয়ে সাদা শাড়ি পরে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে ‘মাস্টারি’ করবেন। কিন্তু ‘লাইট-অ্যাকশন-কাটের’ আলো ঝলমলে জীবন তাকে নিয়ে যায় তারকালোকে।

তারুণ্যের সেই দিনগুলোতেই এল বাঙালির ইতিহাস বদলে দেয়া একাত্তর। অভিনেত্রী কবরী কলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সেখানে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন। পরে দেশে ফিরে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন সিনেমায়।

সেলুলয়েডের সেই রঙিন জীবন শেষে কবরীর পরের জীবন-চলচ্চিত্রও কম বর্ণময় ছিল না। রাজনীতিতে নেমে জীবনের আরেক চলচ্চিত্রের মুখোমুখি তাকে হতে হয়েছিল বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে। এক সময় নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের বধূ কবরীকে ভোটের মাঠে সেই নারায়ণগঞ্জেই নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সব জয় করেই নবম সংসদে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

২০০৬ সালে মুক্তি পায় কবরীর পরিচালার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়না’। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবেও যোগ দিয়েছিলেন।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন তিনি। সে কাজ আর তার শেষ হল না। এ অপ্রাপ্তিসহ আরো অনেক পরিকল্পনা বাস্তববায়ন অসমাপ্ত রেখেই এখন না ফেরার দেশে বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে ‘কবরী’। রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি ও কর্ম।

এমএম//

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *