Dhaka ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে আনলেন বাবা

  • Update Time : ১১:৫১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১
  • / ০ Time View

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে আনার সাহসীকতা দেখালেন এক বাবা।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা অংশে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন এক মৌয়াল। বাঘের কামড়ে ও থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর কাঁধ ও হাত। ২৫ বছর বয়সী ওই মৌয়ালের নাম রবিউল শেখ। বাঘের মুখ থেকে রবিউলকে ছাড়িয়ে আনেন তাঁর বাবা মো. হালিম শেখ (৫৫)।

গত মঙ্গলবার সুন্দরবনের গভীরে মৌয়ালদের একটি দল মধু সংগ্রহের জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে। এরপর আহত রবিউলকে সারা রাত নৌকা বেয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে বুধবার সকালে চিকিৎসকের কাছে আনা হয়।

বেঁচে ফেরার পর রবিউল শেখ বলেন, ‘বাঘটা দেখলাম দৌড়ে আসছে আমার দিকে। বাঘ দেখে একটা গাছের আড়ালে গিয়েছি। বন্দুকের গুলির মতো একদিক থেকে এসে আমাকে ফেলে দিয়ে মুখ দিয়ে কামড়ে ধরেছে। আব্বা ছিল। আব্বা লাঠি দিয়ে বাড়ি মেরে ছাড়িয়ে এনেছে। বাঘ আমাকে সামনে থেকে আক্রমণ করে।

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা একটি খালের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান রবিউল।

বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে ফেরার পর তাঁদের দেখতে যান সেখানকার মধু গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার। খোঁজ নেন পুরো ঘটনার। গনমাধ্যমকে তিনি বলেন, হঠাৎ করে বাঘ আক্রমণ করে। দলের অন্য সদস্যরা তখন হতবিহ্বল হয়ে যান। মঈনুল বলেন, বাঘ ছেলেটার ঘাড়ে কামড়ে দেয়। বাবা হালিম শেখের হাতে লাঠি ও দা ছিল। যখন কামড় দিয়েছে, তখন হালিম শেখ বাঘকে আঘাত করেছেন। তবু বাঘ ছাড়েনি। প্রথমে বাঘের পেছনের পায়ে, পরে সামনের পায়ে আঘাত করেন হালিম শেখ। আঘাতের একপর্যায়ে বাঘ সামনের পা দিয়ে থাবা দেয়। রবিউলের বাঁ হাতে লাগে। হাতটা চার ইঞ্চির মতো লম্বা হয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।

মধু গবেষক মঈনুল আরো বলেন, বাবা খুব সাহসী ছিলেন। ক্রমাগত আঘাত করেন তিনি। একসময় বাঘ ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা গ্রাম থেকে ১২ থেকে ১৩ জনের মৌয়ালের একটি দল নৌকায় করে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের গহিনে। সে দলেই ছিলেন রবিউল শেখ ও তাঁর বাবা হালিম শেখ। বাঘের আক্রমণে আহত রবিউলকে কোলে করে নৌকা পর্যন্ত নিয়ে আসেন তাঁর বাবা। দলের বাকি সদস্যরা সারা রাত নৌকা চালিয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে তাঁকে নিয়ে আসেন সুন্দরবনের সীমান্তবর্তী ছোট ভ্যাটখালী নামক এক জায়গায়, চিকিৎসক সোলায়মানের কাছে। তিনি মূলত বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করছেন দীর্ঘদিন ধরে।

এসএম//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে আনলেন বাবা

Update Time : ১১:৫১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে আনার সাহসীকতা দেখালেন এক বাবা।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা অংশে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন এক মৌয়াল। বাঘের কামড়ে ও থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর কাঁধ ও হাত। ২৫ বছর বয়সী ওই মৌয়ালের নাম রবিউল শেখ। বাঘের মুখ থেকে রবিউলকে ছাড়িয়ে আনেন তাঁর বাবা মো. হালিম শেখ (৫৫)।

গত মঙ্গলবার সুন্দরবনের গভীরে মৌয়ালদের একটি দল মধু সংগ্রহের জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে। এরপর আহত রবিউলকে সারা রাত নৌকা বেয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে বুধবার সকালে চিকিৎসকের কাছে আনা হয়।

বেঁচে ফেরার পর রবিউল শেখ বলেন, ‘বাঘটা দেখলাম দৌড়ে আসছে আমার দিকে। বাঘ দেখে একটা গাছের আড়ালে গিয়েছি। বন্দুকের গুলির মতো একদিক থেকে এসে আমাকে ফেলে দিয়ে মুখ দিয়ে কামড়ে ধরেছে। আব্বা ছিল। আব্বা লাঠি দিয়ে বাড়ি মেরে ছাড়িয়ে এনেছে। বাঘ আমাকে সামনে থেকে আক্রমণ করে।

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা একটি খালের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান রবিউল।

বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে ফেরার পর তাঁদের দেখতে যান সেখানকার মধু গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার। খোঁজ নেন পুরো ঘটনার। গনমাধ্যমকে তিনি বলেন, হঠাৎ করে বাঘ আক্রমণ করে। দলের অন্য সদস্যরা তখন হতবিহ্বল হয়ে যান। মঈনুল বলেন, বাঘ ছেলেটার ঘাড়ে কামড়ে দেয়। বাবা হালিম শেখের হাতে লাঠি ও দা ছিল। যখন কামড় দিয়েছে, তখন হালিম শেখ বাঘকে আঘাত করেছেন। তবু বাঘ ছাড়েনি। প্রথমে বাঘের পেছনের পায়ে, পরে সামনের পায়ে আঘাত করেন হালিম শেখ। আঘাতের একপর্যায়ে বাঘ সামনের পা দিয়ে থাবা দেয়। রবিউলের বাঁ হাতে লাগে। হাতটা চার ইঞ্চির মতো লম্বা হয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।

মধু গবেষক মঈনুল আরো বলেন, বাবা খুব সাহসী ছিলেন। ক্রমাগত আঘাত করেন তিনি। একসময় বাঘ ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা গ্রাম থেকে ১২ থেকে ১৩ জনের মৌয়ালের একটি দল নৌকায় করে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের গহিনে। সে দলেই ছিলেন রবিউল শেখ ও তাঁর বাবা হালিম শেখ। বাঘের আক্রমণে আহত রবিউলকে কোলে করে নৌকা পর্যন্ত নিয়ে আসেন তাঁর বাবা। দলের বাকি সদস্যরা সারা রাত নৌকা চালিয়ে ও পরে কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে করে তাঁকে নিয়ে আসেন সুন্দরবনের সীমান্তবর্তী ছোট ভ্যাটখালী নামক এক জায়গায়, চিকিৎসক সোলায়মানের কাছে। তিনি মূলত বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করছেন দীর্ঘদিন ধরে।

এসএম//