Dhaka ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ককক্সবাজার ভ্রমনে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল

কুরআনের ২৬টি আয়াত নিষিদ্ধের দাবি খারিজ করলো ভারতের সুপ্রিমকোর্ট

  • Update Time : ১২:২৬:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১
  • / ২ Time View

সারাদেশ ডেস্ক:
কুরআন শরীফের ২৬টি আয়াত নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে পিটিশন দাখিল করেছিলেন শিয়া নেতা সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি।
সেই পিটিশন সোমবার সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। শুধু তাই নয়, এরকম একটি ‘সম্পূর্ণ অর্থহীন’ পিটিশন দাখিল করার জন্য আবেদনকারী সৈয়দ ওয়াসিম রিজভিকে ৫০ হাজার রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।

সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের একজন সাবেক চেয়ারম্যান এবং দেশের শিয়া মুসলিম সমাজের একজন নেতা।

গত ডিসেম্বরে তিনি কুরআনের বিশেষ কয়েকটি আয়াত অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবিতে শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এই আয়াতগুলো মূল কোরআনের অংশ নয় বলেও পিটিশনে দাবি করা হয়। তার যুক্তি ছিল, এই আয়াতগুলো মুসলিমদের তরুণ প্রজন্মকে শিখিয়ে বিধর্মীদের, বিশেষত মূর্তিপূজায় বিশ্বাসীদের হত্যা করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী বিধর্মীদের ওপর হামলা চালানোর ‘সাফাই’ হিসেবে এই আয়াতগুলো কাজে লাগাচ্ছে বলেও যুক্তি দেয়া হয়েছিল।

সুপ্রিমকোর্টে সোমবার প্রথম দিনের শুনানিতেই তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনটিকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছেন।

বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন জাস্টিস রোহিংটন নরিম্যান, তিনি এমনও প্রশ্ন তোলেন, ‘আবেদনকারী কি এই পিটিশন নিয়ে সত্যিই সিরিয়াস? আমরা তো বিশ্বাসই করতে পারছি না!’অর্থহীন বিষয় নিয়ে মামলা রুজু করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য আবেদনকারীর আর্থিক জরিমানা করারও সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত

সুপ্রিমকোর্টে এই মামলার শুনানির আগেই ভারতের নানা মহলে সৈয়দ ওয়াসিম রিজভির পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা মাহমুদ দরিয়াবাদী বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘পবিত্র কুরআনের কোনো আয়াত মানুষকে সহিংসতায় প্ররোচিত করে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।’

অল ইন্ডিয়া শিয়া পার্সোনাল ল বোর্ড এবং আরো নানা মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকেও অভিযোগ আনা হয়েছিল, সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি ‘সম্পূর্ণ প্রসঙ্গ-বহির্ভূতভাবে কুরআনের অপব্যাখ্যা’ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার অভিযোগে রিজভিকে নোটিশ পাঠিয়েছিল দেশের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনও।

দক্ষিণ ভারতের আর্কটের নবাব মহম্মদ আবদুল আলিও বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ভারতের সুপ্রিমকোর্ট যদি এই আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাহলে সেটা হবে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।

শুধু ভারতে নয়, বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন ও মুসলমানগন কুরআনের আয়াত নিষিদ্ধ করার দাবিকে ‘আল্লাহর সাথে চরম ধৃষ্টতার শামিল’ বলে বর্ণনা করেছিল। গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় যে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছিল, সেখানেও এই ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছিল বিভিন্ন সংগঠন।

তবে সোমবার সুপ্রিমকোর্টে মামলাটি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার পর এই বিতর্কের অবসান হবে বলে সংশ্লিষ্টদের মত।

সোমবারের শুনানিতে আবেদনকারীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আর কে রাইজাদা অবশ্য যুক্তি দিয়েছিলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনার সীমিত লক্ষ্য নিয়েই এই পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার সাবমিশন হলো, এই বিশেষ আয়াতগুলো বিধর্মী বা কাফিরদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হয়ে সওয়াল করে।’

‘খুব অল্প বয়স থেকে যে বাচ্চাদের মাদরাসায় থেকে পড়াশুনো করতে হয়, তাদের এগুলো শিখিয়ে মগজধোলাই করা হয় -যা কখনোই কাম্য নয়’, যুক্তি দেন তিনি।

সুপ্রিমকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ অবশ্য এরপরও পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, তারা এ বিষয়টি নিয়ে কোনো তর্কবিতর্ক শুনতেও আগ্রহী নয়।

আবেদনকারীকে ৫০ হাজার রুপির প্রতীকী জরিমানা করে তারা আবেদনটিকে পত্রপাঠ খারিজও করে দেন।

এমএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কুরআনের ২৬টি আয়াত নিষিদ্ধের দাবি খারিজ করলো ভারতের সুপ্রিমকোর্ট

Update Time : ১২:২৬:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১

সারাদেশ ডেস্ক:
কুরআন শরীফের ২৬টি আয়াত নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে পিটিশন দাখিল করেছিলেন শিয়া নেতা সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি।
সেই পিটিশন সোমবার সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। শুধু তাই নয়, এরকম একটি ‘সম্পূর্ণ অর্থহীন’ পিটিশন দাখিল করার জন্য আবেদনকারী সৈয়দ ওয়াসিম রিজভিকে ৫০ হাজার রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।

সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের একজন সাবেক চেয়ারম্যান এবং দেশের শিয়া মুসলিম সমাজের একজন নেতা।

গত ডিসেম্বরে তিনি কুরআনের বিশেষ কয়েকটি আয়াত অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবিতে শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এই আয়াতগুলো মূল কোরআনের অংশ নয় বলেও পিটিশনে দাবি করা হয়। তার যুক্তি ছিল, এই আয়াতগুলো মুসলিমদের তরুণ প্রজন্মকে শিখিয়ে বিধর্মীদের, বিশেষত মূর্তিপূজায় বিশ্বাসীদের হত্যা করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী বিধর্মীদের ওপর হামলা চালানোর ‘সাফাই’ হিসেবে এই আয়াতগুলো কাজে লাগাচ্ছে বলেও যুক্তি দেয়া হয়েছিল।

সুপ্রিমকোর্টে সোমবার প্রথম দিনের শুনানিতেই তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনটিকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছেন।

বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন জাস্টিস রোহিংটন নরিম্যান, তিনি এমনও প্রশ্ন তোলেন, ‘আবেদনকারী কি এই পিটিশন নিয়ে সত্যিই সিরিয়াস? আমরা তো বিশ্বাসই করতে পারছি না!’অর্থহীন বিষয় নিয়ে মামলা রুজু করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য আবেদনকারীর আর্থিক জরিমানা করারও সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত

সুপ্রিমকোর্টে এই মামলার শুনানির আগেই ভারতের নানা মহলে সৈয়দ ওয়াসিম রিজভির পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা মাহমুদ দরিয়াবাদী বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘পবিত্র কুরআনের কোনো আয়াত মানুষকে সহিংসতায় প্ররোচিত করে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।’

অল ইন্ডিয়া শিয়া পার্সোনাল ল বোর্ড এবং আরো নানা মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকেও অভিযোগ আনা হয়েছিল, সৈয়দ ওয়াসিম রিজভি ‘সম্পূর্ণ প্রসঙ্গ-বহির্ভূতভাবে কুরআনের অপব্যাখ্যা’ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার অভিযোগে রিজভিকে নোটিশ পাঠিয়েছিল দেশের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনও।

দক্ষিণ ভারতের আর্কটের নবাব মহম্মদ আবদুল আলিও বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ভারতের সুপ্রিমকোর্ট যদি এই আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাহলে সেটা হবে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।

শুধু ভারতে নয়, বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন ও মুসলমানগন কুরআনের আয়াত নিষিদ্ধ করার দাবিকে ‘আল্লাহর সাথে চরম ধৃষ্টতার শামিল’ বলে বর্ণনা করেছিল। গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় যে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছিল, সেখানেও এই ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছিল বিভিন্ন সংগঠন।

তবে সোমবার সুপ্রিমকোর্টে মামলাটি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার পর এই বিতর্কের অবসান হবে বলে সংশ্লিষ্টদের মত।

সোমবারের শুনানিতে আবেদনকারীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আর কে রাইজাদা অবশ্য যুক্তি দিয়েছিলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনার সীমিত লক্ষ্য নিয়েই এই পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার সাবমিশন হলো, এই বিশেষ আয়াতগুলো বিধর্মী বা কাফিরদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হয়ে সওয়াল করে।’

‘খুব অল্প বয়স থেকে যে বাচ্চাদের মাদরাসায় থেকে পড়াশুনো করতে হয়, তাদের এগুলো শিখিয়ে মগজধোলাই করা হয় -যা কখনোই কাম্য নয়’, যুক্তি দেন তিনি।

সুপ্রিমকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ অবশ্য এরপরও পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, তারা এ বিষয়টি নিয়ে কোনো তর্কবিতর্ক শুনতেও আগ্রহী নয়।

আবেদনকারীকে ৫০ হাজার রুপির প্রতীকী জরিমানা করে তারা আবেদনটিকে পত্রপাঠ খারিজও করে দেন।

এমএস//