দণ্ডিত মানিকের বদলে নিরাপরাধ মানিক কারাগারে কিনা, তদন্তে হাইকোর্ট নির্দেশ
- Update Time : ০৬:২৪:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১
- / ২ Time View
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক: মাদকের মামলায় দণ্ডিত মানিক মিয়ার বদলে মানিক হাওলাদার কারাভোগ করছেন কি না, তা চিন্থিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
নামের মিলে মানিক হাওলাদারকে কারাগারে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তাঁর স্ত্রী সালমা বেগম হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ সোমবার আজ এই আদেশ দেন।
এ ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করতে শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের তদন্ত শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিলে বলা হয়েছে।
এছাড়া আদালত এবিষয়ে রুলও জারি করেছেন। আদালত নাম-পরিচয়ের সত্যতা যাচাই ছাড়া এই মামলায় মানিক হাওলাদারকে গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোর আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না এবং তাকে কেন মুক্তি দেয়া হবে না- রুলে তা জানতে চেয়েছেন। স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, সিরাজগঞ্জের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক, সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলারসহ বিবাদীদের (রেসপনডেন্ট) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এবং আগামী ১২ এপ্রিল এবিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী পার্থ সারথী রায়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২ জুন র্যাব অভিযান চালিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে ফেনসিডিলসহ চার ব্যক্তিকে আটক করে। র্যাবের পক্ষ থেকে ওই দিন সলঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে চার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়। এই মামলার আসামিদের একজন শরীয়তপুরের ব্যাপারী কান্দি গ্রামের মানিক মিয়া। গ্রেফতারের কিছুদিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকেই তিনি পলাতক।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার চার আসামিকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন সিরাজগঞ্জের আদালত। একপর্যায়ে সিরাজগঞ্জের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে দেয়া একটি মাদক মামলার রায়ে পাচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. মানিক মিয়া, পিতা নজরুল হাওলাদার, গ্রাম ব্যাপারী কান্দির নামে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর শরিয়তপুরের সখীপুর থানায় আসে। এরপর সখীপুর থানা পুলিশ গত বছরের ২৮ নভেম্বর ওই থানার আলম চান ব্যাপারী কান্দি গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে মানিক হাওলাদারকে গ্রেফতার করে।
মানিক হাওলাদারকে গ্রেফতার পর তাঁর পরিবার গত ৩০ নভেম্বর শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করে। এবং মানিক হাওলাদার প্রকৃত আসামি নন উল্লেখ করে তাঁর সপক্ষে আদালতে কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়। তখন আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করা সহকারী উপপরিদর্শক শামসুর রহমানকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। এরপর গত ৯ ডিসেম্বর এএসআই শামসুর রহমান আদালতে উপস্থিত হয়ে দাবি করেন যে, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানায় আসামি হিসেবে লেখা নামের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় এবং এই নামে অন্য কোনো ব্যক্তি না থাকায় তিনি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’
গত ২ মার্চ মানিক হাওলাদারের স্ত্রী সালমা বেগম তার স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
ডিএ//