সারাদেশ ডেস্ক : দেশে করোনা মহামারির আজ একবছর।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়। মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। এরপর বছরজুড়েই এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে মানুষকে।
গত বছরের ৮ই মার্চ দেশে প্রথম তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি হবে। বিভিন্ন গবেষণায়ও তা দেখা গেছে।
করোনা প্রতিরোধে দেশে এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ এবং নিবন্ধন করে অপেক্ষায় আছেন আরো ১২ লাখ।
এদিকে, প্রথম থেকেই করোনার থাবা ছিল ঢাকাতে। হটস্পটও ছিল রাজধানী। দিনে দিনে সারা দেশে করোনা ছড়ালেও রাজধানীতেই অর্ধেকের বেশি রোগী শনাক্ত হন।
গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে ছিল। এক পর্যায়ে শনাক্তের হার প্রায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়।
ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে তিন সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী। দেশে একদিনে গত বছরের ৩০শে জুন সর্বোচ্চ ৬৪ জন মারা যাওয়ার খবর দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তও উঠেছিল ৪ হাজারের কিছু বেশি।।। শুরুর দিকে করোনার নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতা ছিল কম। পরীক্ষা করার ল্যাবও ছিল মাত্র একটি। ফলে হিমশিম খেতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এখন দেশে ২১৯টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
৬ মার্চ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে শনাক্ত হলেন ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ হাজার ৪৬২ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৭ জন এবং এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৩ হাজার ৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪টি এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৯২টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ২০৫টি। দেশে বর্তমানে ২১৯টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১১৮টি পরীক্ষাগারে, জিন-এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ২৯টি পরীক্ষাগারে এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৭২টি পরীক্ষাগারে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ জন এবং নারী ২ জন। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেছেন ৬ হাজার ৩৯৭ জন এবং নারী মারা গেছেন ২ হাজার ৬৫ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং নারী ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এসএস//
Leave a Reply