সারাদেশ ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ১৭তম বিধানসভা নির্বাচন হবে আট দফায়।
ফলাফল ঘোষণা হবে ২ মে। ভোটগ্রহণ হবে যথাক্রমে ২৭ মার্চ, ১, ৬, ১০, ১৭, ২২, ২৬ ও ২৯ এপ্রিল। শুক্রবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে একথা জানিয়ে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।
সে রাজ্যে টানা প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হবে। অথচ চলতি নির্বাচন পর্বেই তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে ভোট হবে এক দফায়। আসন সংখ্যা ২৩৪ হওয়া সত্ত্বেও। কেন? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জবাবও দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। উল্লেখ্য, তামিনলাড়ুর মোট ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৭৪৯। আর পশ্চিমবঙ্গে ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৮৩২ জন।
নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সুনীল অরোরা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় নির্বাচন করানোর মূল কারণ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া বা মুভমেন্ট। তাছাড়া তামিলনাড়ুর নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও চিন্তার। তাই সেখানে বিশেষ এক্সপেনডিচার পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগসহ আমাদের নিজস্ব সূত্র থেকে খবর অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে দফা বাড়ানো হয়েছে। যদিও তা বেশি নয়, বেড়েছে মাত্র এক দফা। গত বিধানসভা তো বটেই, ২০১৯ সালেও পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ভোট হয়েছিল সাত দফায়।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে একজন মাত্র স্পেশাল পুলিস পর্যবেক্ষক পাঠানো হলেও পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছেন দু’জন। তারা হলেন বিবেক দুবে ও মৃণালকান্তি দাশ। বিএসএফের দু’টি বিশেষ হেলিকপ্টারও রাখা থাকবে, যাতে কোথাও কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত সেখানে পৌঁছতে পারে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটই কমিশনের লক্ষ্য। ওই মতোই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। আর নির্বাচন পর্বে রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্যই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়। তাই বাহিনীকে বসিয়ে রাখা, অথবা পুলিশ-প্রশাসনের উপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর খবরদারির অভিযোগ- কোনোটিই ঠিক নয়।
স্পর্শকাতর বুথের ক্ষেত্রে ওয়েব কাস্টিংয়ে জোর দেয়া হয়েছে। যাতে নজরদারি বজায় থাকে। পশ্চিমবঙ্গসহ কেরল, তামিলনাড়ু, আসাম ও কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরির ভোট ঘোষণাকে ঘিরে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনেও ছিল টানটান উত্তেজনা। পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন তফসিল ঘোষণা হয় সবার শেষে।
ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলেই ফেললেন, ‘আপনারা তো এটার জন্যই অপেক্ষা করে আছেন!’
দক্ষিণের তিন রাজ্য তামিলনাড়ু, কেরল ও পুদুচেরিতে ভোট হবে মাত্র এক দফায় এবং একই দিনে-৬ এপ্রিল। অসমে নির্বাচন তিন দফায়। ২৭ মার্চ, ১ এবং ৬ এপ্রিল। চার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরি, সর্বত্রই ফলাফল ঘোষণা হবে ২ মে। সব মিলিয়ে ৮২৪টি আসনে ভোট। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ কোটি ৬৮ লক্ষেরও বেশি। কোভিড পরিস্থিতিতে ভোটের কথা মাথায় রেখে বিহার মডেলেই নির্বাচন হবে। বাড়ছে বুথের সংখ্যা। সব মিলিয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার বুথে ভোটদান হবে। প্রতিটি বুথ একতলায়।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পরপরই সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন মূখ্যমন্ত্রী ও তৃনমুল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। তিনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তবে ৮ দফায় তার রাজ্যে ভোট অনুষ্ঠানে কোন বিশেষ দলকে (বিজেপিকে ইংগিত) সুবিধা পাইয়ে দিতে কি-না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। কেন্দ্রীয় সরকারেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। বাংলার মানুষ আবারো তৃণমূলকেই নির্বাচিত করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ডিএ/এসএস//
Leave a Reply