শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা
- Update Time : ০৩:০১:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / ১ Time View
সারাদেশ ডেস্ক : ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কথা ও শহীদ আলতাফ মাহমুদের অমর সুরে ফুটে ওঠা গভীর অনুভব ও বেদনার দিন একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। আত্মত্যাগের অহংকারে জ্বলে ওঠার অনন্য এক দিন আজ। এই দিনে বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে সারা দেশের মানুষ।
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গর্ব আর শোকের এই দিন পালন করছে জাতি। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সবাই। তবে করোনা মহামারির কারণে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের আয়োজনটি এবার হচ্ছে সীমিত পরিসরে।
প্রতি বছর একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের তরফ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাঙালির শ্রদ্ধা জানানোর পর্ব। মহামারীর মধ্যে এ বছর তাদের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তাদের সামরিক সচিবরা। রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফুল দেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম। আর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পৃথিবীর বুকে ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে, অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ইতিহাস সৃষ্টিকারী জাতি বাঙালি। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির চেতনার প্রতীক। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, সফিউর, আউয়াল, অহিউল্লাহর রক্তে রাঙানো অমর একুশে বাঙালির পথের দিশা, প্রাণের স্পন্দন।
রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ এই মহান শহীদ দিবস শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম দৃষ্টান্ত এই ঘটনা। এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের সংগ্রামের সূচনা ঘটে এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি পায়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া আজ সরকারি ছুটির দিন। ভাষাশহীদদের স্মরণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হচ্ছে শোকের কালো পতাকা। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বেতারে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে।
বিশ্বের সকল জাতিসত্তার ভাষা রক্ষার দিন হিসেবে জাতিসংঘ বেছে নিয়েছে বাঙালি জাতির ভাষার জন্য লড়াইয়ের এ দিনটিকে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আজ বাংলাদেশের পাশাপাশি ইউনেস্কোর ১৯৫টি সদস্য এবং ৯টি সহযোগী সদস্য রাষ্ট্রের ছয় হাজার ৯০৯টি ভাষাভাষী মানুষ পালন করবে এই দিবস। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্য সাধারণ অর্জন।
এসএস//