Dhaka ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণ: সাক্ষী-বাদী-আইনজীবীর নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ

  • Update Time : ০২:০৫:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ০ Time View

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক : সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে গৃহবধূর গণধর্ষণের ঘটনায় আনা মামলার বাদী, সাক্ষী, আইনজীবীকে নিরাপত্তা দিতে সিলেটের পুলিশ কমিশনারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ আদেশ দেন।

ওই গণধর্ষণের ঘটনার পর আনা মামলায় দুটি আদালতে হওয়া ভিন্ন অভিযোগের বিচার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেকে করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, গনধর্ষণের ঘটনায় আনা মামলার দুই ধারায় চার্জশিট দেয় পুলিশ।ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং ভয়ভীতি, চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। তখন আমরা বলেছি, দু’টি অভিযোগের বিচার একসঙ্গে হোক, কিন্তু ২৪ জানুয়ারি আমাদের সে আবেদন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাকচ করে দেন। এরপর আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি।

তিনি বলেন, আজ শুনানি শেষে হাইকোর্ট দুই অভিযোগের বিচার একই আদালতে করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে মামলার বাদী, সাক্ষী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিলেট পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, কোনো আসামির আইনজীবী না থাকলে তাকে আইনজীবী দিতে বলা হয়েছে।

গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটি বতর্মানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে কয়েক যুবক। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তারা হলেন-সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
ওই ঘটনায় চাঁদা দাবী, ছিনতাই ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ একটি এবং গণধর্ষণের অভিযোগে অপর মামলার বিচার একসাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে না হওয়ার প্রেক্ষাপটে আদালত পরিবর্তন চেয়ে ৩ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী।
আবেদনের পক্ষে আইনজীবী আরো ছিলেন ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন।

মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস এলাকায় জঘন্য এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পরে একে একে সব আসামিকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

গণধর্ষণের ওই ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর গত সেপ্টেম্বরে আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। এরপর এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর একটি হাইকোর্ট দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ওই গনধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা নিরূপণে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়ে তা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দেয়।

ডিএ/এসএস//

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণ: সাক্ষী-বাদী-আইনজীবীর নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ

Update Time : ০২:০৫:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক : সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে গৃহবধূর গণধর্ষণের ঘটনায় আনা মামলার বাদী, সাক্ষী, আইনজীবীকে নিরাপত্তা দিতে সিলেটের পুলিশ কমিশনারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ আদেশ দেন।

ওই গণধর্ষণের ঘটনার পর আনা মামলায় দুটি আদালতে হওয়া ভিন্ন অভিযোগের বিচার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেকে করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, গনধর্ষণের ঘটনায় আনা মামলার দুই ধারায় চার্জশিট দেয় পুলিশ।ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং ভয়ভীতি, চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। তখন আমরা বলেছি, দু’টি অভিযোগের বিচার একসঙ্গে হোক, কিন্তু ২৪ জানুয়ারি আমাদের সে আবেদন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাকচ করে দেন। এরপর আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি।

তিনি বলেন, আজ শুনানি শেষে হাইকোর্ট দুই অভিযোগের বিচার একই আদালতে করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে মামলার বাদী, সাক্ষী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিলেট পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, কোনো আসামির আইনজীবী না থাকলে তাকে আইনজীবী দিতে বলা হয়েছে।

গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটি বতর্মানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে কয়েক যুবক। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তারা হলেন-সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
ওই ঘটনায় চাঁদা দাবী, ছিনতাই ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ একটি এবং গণধর্ষণের অভিযোগে অপর মামলার বিচার একসাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে না হওয়ার প্রেক্ষাপটে আদালত পরিবর্তন চেয়ে ৩ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী।
আবেদনের পক্ষে আইনজীবী আরো ছিলেন ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন।

মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস এলাকায় জঘন্য এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পরে একে একে সব আসামিকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

গণধর্ষণের ওই ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর গত সেপ্টেম্বরে আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। এরপর এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর একটি হাইকোর্ট দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ওই গনধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা নিরূপণে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়ে তা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দেয়।

ডিএ/এসএস//