সারাদেশ ডেস্ক : নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ক্ষমতা গ্রহণের এই প্রক্রিয়া ‘অসমর্থনযোগ্য’। সেনাবাহিনীকে বুঝতে হবে, দেশ চালানোর এটা সঠিক পথ নয়।
গত সোমবার মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্টসহ বেশ কিছু নেতাকে আটক করে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরই প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার জাতিংসঘ মহাসচিব আরও বলেন, মিয়ানমারে আবার সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়ন করা হোক। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও ব্যাপারটি উঠবে। সেখানে বিশ্ব নেতারা ঐক্যমতে পৌঁছাবেন বলে তার আশা।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর হাত থেকে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বিশ্ব নেতাদের সহায়তায় চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যতদূর সম্ভব আমরা চেষ্টা করব। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, নির্বাচলে ফলাফল এবং জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবহিনীর নেওয়া অবস্থান একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে বুধবার জাতিংসঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে একটি নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের কথা ছিল। তবে ‘ভেটো পাওয়ার’ সম্পন্ন চীনের বিরোধীতায় তা হয়নি। মিয়ানমার নিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষে মত দেয়নি চীন।
বিশ্বের অনেক দেশই মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অবস্থানের বিরোধীতা করেছে। নিন্দা ও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। কোনও কোনও দেশ বলছে, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছিল ৩৪৬টি আসন। সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। যদিও ইউএসডিপি ৭১টি আসনে জয় পেয়েছে। ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়ায় দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এসএস//
Leave a Reply