মেয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস: ‘মির্জা আলমগীরের সারাজীবনের রাজনীতি বৃথা যাবে না’
- Update Time : ০৭:০৫:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১
- / ১ Time View
সারাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। দেশের পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত বিএনপি মহাসচিব কখনই আড়ম্বরপূর্ণভাবে জন্মদিন পালন করেন না।
এদিন দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানান। অন্যদিনের মতোই নিয়মিত কাজ চালিয়ে যান। তাই অন্য বারের মতো এবারও থাকছে না জন্মদিনের বিশেষ কোনও আয়োজনও।
এদিকে বাবার জন্মদিনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার বড় মেয়ে শামারূহ মির্জা। ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- “আমরা দুই বোন যখন ছোট্ট ছিলাম, আমার বাবা চাকরি ছেড়ে, পুরো পরিবারকে ঢাকায় ফেলে ঠাকুরগাঁয়ে চলে যান। এক-দুদিন না, বছরের পর বছর আমরা বড় হয়েছিলাম বাবাকে কাছে না পেয়ে, কারণ তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করবেন।
খুব কঠিন ছিলো আমাদের বড়ো হওয়া। আমরা কষ্ট পেয়েছি, বিরক্ত হয়েছি কিন্তু আমার বাবাকে কোনোদিন নিরাশ হতে দেখিনি।
৩০ বছর পেরিয়ে গেলো, আমরা টুক টুক করে বড় হলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি, পিএইচডি করেছি, চষে বেড়িয়েছি পৃথিবী। প্রায়ই ভাবি, আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন, তার জন্যও আমার এই জীবনটা সম্ভব ছিলো। কিন্তু তিনি কঠিনকে ভালোবেসেছিলেন-আপনাদের জন্য। সত্যিই বলছি আপনাদের জন্য।
মির্জা আলমগীর এই ৭৩ বছরেও হতোদ্যম হন নি। আজকে এই জেলে তো কালকে ওই কোর্টে। শরীরটাও ভালো না। আমি তার মেয়ে-আমার দুশ্চিন্তার কোনও শেষ নেই। জিজ্ঞেস করলেই আব্বু বলে, লড়াই আমাদের করতেই হবে শেষ পর্যন্ত। মির্জা আলমগীর বাসায় আমাদের যা বলেন, যে ভাষায় বলেন, আপনাদেরকেও ঠিক তাই বলেন-মন থেকে বলেন। তার চেহারা একটাই।
মির্জা আলমগীর প্রতিশোধের জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি শুধু একটাই জিনিস চেয়েছেন সারা জীবন- গণতন্ত্র, সাধারণ মানুষের উন্নতির রাজনীতি। বাংলাদেশের আজকের পরিস্থিতিটা খুবই সহজ আসলে, আপনি যদি চিন্তা করেন। হয় আপনি সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের পক্ষে, না হলে আপনি শহরের কিছু কোটিপতির আরো বড়োলোক হওয়ার পক্ষে। হয় আপনি ইনসাফের পক্ষে, না হয় আপনি বিনা বিচারে মানুষকে হত্যার পক্ষে, রামদা আর হাতুড়ির পক্ষে।
ক্লিশে মনে হতে পারে কিন্তু আব্বুর সারা জীবন না হলেও অন্তত আমার সারা জীবনটুকু তিনি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্যেই দিয়েছেন। আজকে তার প্রয়োজন আপনাদের। আপনারা কেন ধরেই নিয়েছেন যে লুটপাট আর হত্যাই বাংলাদেশের একমাত্র পরিণতি। আপনারা কি স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছেন? মানুষটা তার যৌবন দিয়েছেন এই দেশের সাধারণ মানুষের জন্য, এই শেষ বয়সে এসে ক্ষমতাধর আর লুটেরাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন।
আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। মির্জা আলমগীরের সারা জীবনের রাজনীতি বৃথা যাবে না। আপনি আর আমি এই ঘুরে দাঁড়ানোর রাজনীতির অংশ হবো। আমরা আমাদের সন্তানদের এমন বাংলাদেশ দিয়ে যাবো যেনো তারা গর্ব বোধ করতে পারে। শুধু বাংলাদেশ স্বাধীন হলে চলবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও স্বাধীন হতে হবে।! “
উল্লেখ, মির্জা ফখরুলের বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে এই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন।
এসএস//