বিশেষ প্রতিনিধি : দেশের মানুষকে অ্যাপের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
আজ সোমবার ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে করোনার টিকাদান কর্মোদ্যোগের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হয়। সেখানে অনলাইন নিবন্ধন করার জন্য তৈরি করা অ্যাপ কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা দেখানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস),তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআই কর্মসূচি যৌথভাবে এই অ্যাপ তৈরি করেছে। তবে এখনই এই অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের কর্মকর্তারা জানান, ২৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর নিবন্ধনের জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হতে পারে।
কর্মকর্তারা বলেছেন,অনলাইনে নিবন্ধনের জন্য অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর অবশ্যই দরকার হবে। যাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তিনি নিবন্ধন করতে পারবেন না, আপাতত করোনার টিকাও পাবেন না।
অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধন শেষ হলে একটি কার্ড ইস্যু হবে নিবন্ধনকারীর নামে। এই কার্ড সুবিধামতো জায়গা থেকে নিবন্ধনকারী প্রিন্ট করতে পারবেন। টিকা গ্রহণের দিন ওই কার্ড কেন্দ্রে আনতে হবে। আর কোন দিন টিকা নিতে হবে, তা মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তবে অনলাইনে নিবন্ধনের বিকল্প হিসেবে অগ্রাধিকার পাওয়া মানুষের তালিকা তৈরি করতে উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যেভাবে নিবন্ধন: করোনার টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধন করতে হবে ‘সুরক্ষা’ নামক ওয়েব পোর্টালে (www.surokkha.gov.bd)। অ্যান্ড্রয়েড বা অ্যাপল প্লে স্টোর থেকেও সুরক্ষা মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করেও করা যাবে নিবন্ধন।
সেখানে গিয়ে ‘নিবন্ধন’ বাটনে ক্লিক করে প্রথমে ধরন নির্বাচন করতে হবে। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, জন্মতারিখ (এনআইডি অনুযায়ী) দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে নিবন্ধন করা যাবে না। ১৮ বছরের কম বয়সীরাও নিবন্ধন করতে পারবে না। তথ্যগুলো ঠিকমতো দিলে বাংলায় ও ইংরেজিতে নাম দেখাবে। এরপর মোবাইল নম্বর দিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা কো-মরবিডিটি থাকলে সেটা বলতে হবে। টিকা গ্রহণকারীর পেশা এবং কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট কোনো কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত কি না,সেটি বলতে হবে।
সবশেষে টিকা গ্রহণকারীর বর্তমান ঠিকানা ও কোন কেন্দ্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক, সেটি দিলে নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।
টিকাকেন্দ্রে টিকা নেয়া:
প্রথমে টিকা কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল বা অ্যাপের ‘টিকা কার্ড সংগ্রহ’ বাটনে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্মতারিখ দিয়ে ‘যাচাই করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর নিবন্ধনের সময় দেওয়া মুঠোফোনের নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে ওটিপি (ওভার দ্য ফোন) কোড দিয়ে ‘ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড’ বাটনে ক্লিক করলে টিকা কার্ড ডাউনলোড হবে। এসএমএসের মাধ্যমে পাওয়া টিকা গ্রহণের তারিখে নির্দিষ্ট টিকাকেন্দ্রে সশরীরে উপস্থিত হয়ে টিকা নেয়া যাবে। এ সময় টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। কোভিড-১৯ টিকার দুটি ডোজ নেয়ার পর সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল থেকে টিকা সনদ সংগ্রহ করা যাবে।
পরিকল্পনা : আগামী ছয় মাসে তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। জনপ্রতি দুটি করে মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকার প্রয়োজন হবে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এরই মধ্যে দেশে এসেছে। ২১ জানুয়ারি ভারত ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। ২৫ জানুয়ারি সোমবার ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ দেশে এসেছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে টিকা দেয়া শুরু হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটায় টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসএস//
Leave a Reply