নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে এক বৃদ্ধাকে নির্যাতন ও চুরির ঘটনায় গৃহকর্মী রেখা আক্তার ও তার স্বামী ফরহাদ এরশাদের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
শুক্রবার ২২ জানুয়ারি ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমানের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের এই আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) শাহজাহানপুর থানার এসআই রেজাউল করিম দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, রেখা দীর্ঘদিন ধরে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। তার স্বামীসহ পরিকল্পনাপূর্বক ভিকটিমের বাসা ফাঁকা পেয়ে গত ১৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা ৫৭ মিনিট পর্যন্ত রেখা ভিকটিম বিলকিস বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে। পরে ওই বাসা থেকে ২৪ ভরি স্বর্ণ, নগদ দুই লাখ টাকা এবং একটি টেলিভিশন চুরি করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি অত্যন্ত লোমহর্ষক এবং চাঞ্চল্যকর।
আসামিদের কাছ থেকে আংশিক মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট চোরাই মালামাল উদ্ধার এবং মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন মামলার আইও।
রাষ্ট্রপক্ষে শাহজাহানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেক আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন।
শুনানিতে বলা হয়, ভিকটিম বৃদ্ধ মানুষ। তাকে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে। এখন তিনি মূমূর্ষ অবস্থায় আছেন। ভিকটিম একজন আইনজীবীর মা। আসামিরা এর আগে বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের ঘৃণিত অপরাধ করেছে।
আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত ৮ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২১ জানুয়ারি ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থেকে রেখাকে স্বামীসহ গ্রেফতাট করে শাহজাহানপুর থানা পুলিশ। তাকে ঢাকায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় ওই বাসা থেকে লুট করা টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করে পুলিশ।
ওই বাসায় বৃদ্ধাকে দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল রেখা। বৃদ্ধাকে একা পেয়ে সে তার সেবা-যত্ন করার বদলে শরীরের উপর বসে, বাথরুমে নিয়ে শীতের দিনে ঠান্ডা পানি ঢেলে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে বৃদ্ধা বাথরুম থেকে বের হয়ে আসেন। সেসময় ওই বৃদ্ধার ব্যবহৃত হাতের ছড়ি (লাঠি) দিয়ে রেখা তাকে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
এরপর আলমারি থেকে স্বর্ণ ও টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি বাসায় থাকা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে মেহবুবা জাহান শাহজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এসএস//
Leave a Reply