সারাদেশ ডেস্ক : ভারতে করোনার টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ১৬ জানুয়ারি তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্রে একই সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচীর সূচনা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে শুরু হলো করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচী।
প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ জন করে মোট প্রায় তিন লক্ষ সামনের সারিতে থেকে করোনা যুদ্ধে লড়াই করা স্বাস্থ্য-কর্মীদের আজ টিকা দেয়া হবে।
টিকাদান কর্মসূচীর সূচনা করে এক ভিডিও কনফারেন্সে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ইতিহাসে এত বড় টিকাদান কর্মসূচি এই প্রথম। তবে টিকাদান শুরু হলেও, মাস্ক ব্যবহার এবং দূরত্ব বিধি বজায় রাখায় ঢিলেমি দিলে চলবে না।
প্রথম দফায় চিকিৎসক, নার্স, অ্যাম্বুলেন্স চালক, স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই-কর্মীরা টিকা পাবেন। এর পরে পুলিশ, সামরিকবাহিনীর সদস্যরা এবং অন্যান্য করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় টিকা পাবেন প্রায় তিন কোটি মানুষ। দ্বিতীয় ধাপে টিকা দেওয়া হবে ৫০ বছরের বেশি বয়স্কদের- বিশেষত যাদের আগে থেকেই কোনও না কোনও অসুস্থতা রয়েছে। এদের সংখ্যাটা প্রায় ২৭ কোটি।
টিকা দেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। ২ হাজার ৩৬০ জন মূল প্রশিক্ষক, সারা দেশে ৬১ হাজার প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং দু লক্ষ ভ্যাক্সিনেটার – অর্থাৎ যারা টিকা দেবেন – তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মোট ২১২টি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে টিকা-করণের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় রাজ্যের মোট ৬ লক্ষ স্বাস্থ্য-কর্মীকে টিকা দেয়া হবে।
শনিবার কলকাতার ১৯টি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা-করণ শুরু হয়েছে গুলোর মধ্যে কলকাতার মেডিকাল কলেজ এবং অন্য কয়েকটি সরকারী হাসপাতাল যেমন আছে, তেমনই রয়েছে আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতাল। প্রতিটি টিকাদান দলে ভ্যাক্সিনেটর ছাড়াও চারজন করে থাকবেন।
সেরকম ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যক্তিকে কাজ শেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ ভ্যাক্সিন নেওয়ার জন্য কো-উইন নামে একটি সরকারী অ্যাপে নাম রেজিস্টার করাতে হচ্ছে। প্রত্যেক ব্যক্তিকে কবে কোন কেন্দ্রে কটার সময়ে গিয়ে টিকা নিতে হবে, সেটা এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
টিকা কেন্দ্রে যাওয়ার পরে নথিপত্র পরীক্ষা করা এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে একটি ঘরে অপেক্ষা করতে হবে। তারপরে টিকা দেওয়ার ঘরে পাঠানো হবে টিকা-গ্রহণকারীকে। টিকা নেওয়ার পরে অন্তত আধঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, টিকাদান কেন্দ্রেই তার চিকিৎসা করা হবে এবং প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক করোনার দুটি ভ্যাক্সিনকে জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিয়েছে। এর মধ্যে একটি অক্সফোর্ড আবিষ্কৃত কোভিশিল্ড, যেটি ভারতে তৈরি করছে সিরাম ইন্সটিটিউট। অন্যটি ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা কাউন্সিল বা আই সি এম আর ও ভারত বায়োটেক সংস্থার তৈরি কোভ্যাক্সিন।
সূত্র: বিবিসি
Leave a Reply