বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ‘ধ্বংসাবশেষ’ উদ্ধার
- Update Time : ০৩:৩২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
- / ২ Time View
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার শ্রীবিজয়া এয়ারের একটি উড়োজাহাজ ৬২ জন আরোহী নিয়ে জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পরপরই সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী দাবি করছে, সাগরে উড়োজাহাজটির বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান খুঁজে পেয়েছেন তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে রোববার সাগর থেকে মানব দেহের অঙ্গ ও উড়োজাহাজাটির কিছু সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিমানবন্দর থেকে ওড়ার চার মিনিট পর রাডারের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
দ্য ডেটিকডটকম পরিবহনমন্ত্রী বুদি কারিয়ার বরাত দিয়ে জানায়, বিমানবন্দর থেকে ১২ মাইল দূরে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী বুদি কারিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিমানবন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লাকি দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয় শ্রীবিজয়ার উড়োজাহাজটি।
প্রত্যক্ষদর্শী এক জেলে বিবিসিকে বলেন, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় বজ্রপাতের মতো মনে হচ্ছিল।
সামারিক বাহিনীর একটি জাহাজের ওপর অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান বাগুস পুরহিতো বলেন, দুটি পয়েন্টে আমরা সিগন্যাল শনাক্ত করেছি। এটি ব্ল্যাক বক্স হতে পারে- আমরা তদন্ত করে দেখব।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াহিউদ্দিন আরিফ আইনিউজকে জানিয়েছেন, তারা উড়োজাহাজের কাঠামোর সম্ভাব্য টুকরা পেয়েছেন যেটি প্রায় এক মিটার লম্বা, পাশাপাশি চাকা, টায়ারের টুকরা ও মানব দেহের অঙ্গও পেয়েছেন।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র ইউসিরি ইউনুস জানিয়েছেন, তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা থেকে দুটি ব্যাগ গ্রহণ করেছেন তারা। প্রথম ব্যাগে যাত্রীদের জিনিসপত্র ও অপর ব্যাগে মানব দেহের অঙ্গ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এসব জিনিস শনাক্ত করতে কাজ করছি আমরা।
ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর চিফ অব স্টাফের সহকারী হেনরি আলফিয়ানদি জানিয়েছেন, শিগগিরই উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা।
ইন্দোনেশিয়ার মেরিন পুলিশের পরিচালক মুহাম্মদ ইয়াসিন স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জাকার্তা উপকূলের লাকি ও লানচাং দ্বীপের বাইরের দিকের চক্র ঘিরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই জায়গায় সাগর ২০ থেকে ২৩ মিটার গভীর বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই এলাকায় ১০টি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এসব জাহাজে নৌবাহিনীর ডুবুরিরা রয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ভারি বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসের কারণে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হতে পারে।
ওই ডমেস্টিক ফ্লাইটে ১২জন ক্রুসহ মোট ৬২ জন আরোহী ছিলেন, তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা যায়নি। তাদের সবাই ইন্দোনেশীয় নাগরিক বলে দেশটির ট্রান্সপোর্ট সেইফটি কমিটি জানিয়েছে।
ওই ফ্লাইটের কারও জীবিত থাকার আশা আছে কি না, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি। শ্রীবিজয়া এয়ারের প্রধান নির্বাহী জেফারসন ইরউইন জওউয়েনা এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, যাত্রা শুরুর আগে উড়োজাহাজটিতে কোনো সমস্যা ছিল না।
বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ২৭ বছরের পুরনো একটি বোয়িং ৭৩৭-৫০০। এর আগে ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার এয়ারলাইন লায়ন এয়ারের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ ১৮৮ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সবাই মারা যায়।
ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের চার মিনিটের মধ্যে ফ্লাইট এসজে ১৮২ আকাশে ১০ হাজার ৯০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছিল। এরপর সেটি খাড়াভাবে নামতে শুরু করে এবং ২১ সেকেন্ড পর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সুকার্ন-হাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ফ্লাইট এসজে ১৮২ নিখোঁজ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে পাইলটকে জিজ্ঞেস করেছিল, ফ্লাইটটি প্রত্যাশিত পথ ছেড়ে উত্তরপশ্চিম দিকে কেন যাচ্ছে।
কেন উড়োজাহজটি হঠাৎ করে নিচের দিকে নামা শুরু করেছিল তাৎক্ষণিকভাবে তার কোনো কারণ জানা যায়নি।
এসএস//