পিলখানা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া চারজনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল

- Update Time : ০৬:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২০
- / ৭ Time View
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিবেদক : পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় হত্যা মামলায় হাইকোর্টে খালাস পাওয়া চারজনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিচারিক আদালতের রায়ে এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। এই চারজনসহ উচ্চ আদালতে খালাস ও সাজা কমে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষ।
এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপির পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি। হাইকোর্টের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ও সাজা কমেছে—এমন দণ্ডিতের ক্ষেত্রে আপিল করা হবে, যার প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়সহ একটি লিভ টু আপিলে পৃষ্ঠাসংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৫০ হাজারের বেশি। এত অধিক পৃষ্ঠার আপিল এর আগে দায়ের হয়নি। এই আপিলের কাগজপত্র দিয়ে অন্যান্য আপিল শুনানির জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হবে। বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, তবে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করেছে।
হাইকোর্টে খালাস পাওয়া চারজন হলেন হাবিলদার মো. খায়রুল আলম, নায়েব সুবেদার আলী আকবর, হাবিলদার বিল্লাল হোসেন ও সিপাহি মেজবাহ উদ্দিন (পলাতক)। তাদের বিরুদ্ধে ১৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্রোহে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, নিষ্ঠুর আচরণ ও নির্যাতনের শিকার হন তৎকালীন বিডিআরে কর্মরত অনেক সামরিক কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
ওই বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী ওই বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন। নৃশংস ওই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়, যা পরে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বরে হত্যা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। হত্যা মামলার ৮৪৬ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয় আর খালাস পান ২৭৮ জন।
ইতিহাসে আসামির সংখ্যায় এটিই সবচেয়ে বৃহত মামলা।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি দণ্ডিত আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষ খালাস পাওয়া ৬৯ জনের ক্ষেত্রে পৃথক আপিল করে।
আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বৃহত্তর বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেপলয়া হয় ২২৮ জনকে। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৮ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়।
এসএস//