সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা : আসামিদের আপিল খারিজ, বিস্ফোরক আইনের মামলা চলবে
- Update Time : ০৪:৪৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০
- / ০ Time View
নিজস্ব প্রতিবেদক: তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে সাতক্ষীরায় দেড় যুগ আগে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলার অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আনা আসামিদের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আর অস্ত্র আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার ১৭ ডিসেম্বর এ আদেশ দেন।
রায়ের পর সহকারী এটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলার আপিল খারিজ হওয়ার এর আগে দেয়া স্থগিতাদেশ এখন আর নেই। এ মামলার কার্যক্রম চলতে আইনগত আর কোনরূপ বাধা নেই। অস্ত্র আইনের মামলায় আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণের আলোকে নতুন করে অভিযোগ গঠন করতে বলা হয়েছে। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলে তিনি জানান।
সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে দেড় যুগ আগে হামলার ঘটনায় করা মামলায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আসামি আলতাব হোসেনসহ অন্যরা ২০১৭ সালে হাইকোর্টে পৃথক দুটি আপিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে একই বছরের ৯ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলা দুটির কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। আর পৃথক আপিলের ওপর আজ হাইকোর্ট বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলার অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে করা আসামিদের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। অস্ত্র আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাংবাদিক।
ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে যান, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হয়।
অভিযোগ গঠনের পর হত্যাচেষ্টা মামলাটি বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন রকিব ওরফে রাকিবুর রহমান নামের এক আসামি। একই বছরের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৮ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায় দেন। রুল খারিজ করে দেয়া রায়ে তিন মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়। এখন হত্যাচেষ্টা মামলাটির কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলছে।
হামলার ঘটনায় করা মামলায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে আসামি আলতাব হোসেনসহ অন্যরা পৃথক আপিল করেন। একই বছরের ৯ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলা দুটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। থমকে যায় মামলা দুটির কার্যক্রম। আজ আদেশের ফলে এখন মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই।
বাসস/এএসজি/ডিএ//