বিশেষ প্রতিবেদক : আজ ঐতিহাসিক ‘১৬ ডিসেম্বর’।
১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমপর্ণ করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। আজ বাংলাদেশের মানুষের গৌরবের দিন। বিশ্ব মানচিত্রে লাল–সবুজের পতাকার স্থান পাওয়ার দিন।
যেসব বীর সন্তানের প্রাণের বিনিময় এবং অসীম ত্যাগে এই পতাকা ও মানচিত্র এসেছে, তাঁদের শ্রদ্ধা ও স্মরণের মাধ্যমেই এই দিবসের মহিমা প্রকাশ পাবে আজ দেশব্যাপী।
এবার বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকী। আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী তথা ৫০ বছর।
স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীও আগামী বছর। সব মিলিয়ে এবারের বিজয়ের উদ্যাপনে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে।
তবে নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবার মহান বিজয় দিবস পালনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা রয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ১৫ ডিসেম্বর থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়কদ্বীপ ও মোড় আলোকসজ্জিত করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর সকালে জাতীয় পতাকা শোভা পাবে আঙিনায়।
বিজয় দিবসে রাজধানী ঢাকার অলিগলিসহ দেশব্যাপী পাড়া মহল্লার অলিগলিতে মাইকে বাজতে শোনা যায় বঙ্গবন্ধুর রেকর্ড করা ভাষণ ও মুক্তির গান।
১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না। প্রতিবছর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সরকারের দায়িত্বশীল, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি কূটনৈতিক ও প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অংশ নেন বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপরই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
মহামারি করোনার কারণে এবার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সশরীরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন না। তাঁদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি।
বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি–বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাণীতে বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি, দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই, গড়ে তুলি বঙ্গবন্ধুর বিপ্লবের সোনার বাংলা। মহান বিজয় দিবসে এই আমার প্রত্যাশা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ইউনেসকো যৌথভাবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছে। আগামী বছর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করি।’
দেশের অন্যতম বৃহত রাজনৈতিক দল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বিজয় দিবসে দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সবার সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
কর্মসূচি : বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করবে। সকাল সাড়ে আটটায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন দলটির নেতারা। সেখান থেকে ফিরে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁরা। বেলা সাড়ে তিনটায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে সারা দেশে দলের নেতারা কর্মসূচি পালন করবেন বলে দলীয় সূত্রগুলো জানায়।
এসএস//
Leave a Reply