Dhaka ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

বাংলার একটি ঐতিহ্য :পাবনার রুহুল বিলের বাউত উৎসব

  • Update Time : ০৬:৪২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ১ Time View

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া-চাটমোহরের মধ্যবর্তী চলনবিল অঞ্চলজুড়েই প্রতিবছর এ সময়টিতে ধাপে ধাপে চলে এ বাউত উৎসব। জেলার দুইটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে চলনবিলের বেশকিছু অংশ। এর মধ্যে বিল রুহুল অন্যতম। এই বিলের পশ্চিমে চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা টেংগজানি, বোয়ালিয়া, উত্তরে পাটুলিপাড়া রঙ্গালিয়া দক্ষিণে লাউত কান্দি মধুরগাতি, আলমনগর, পূর্বে হাটগ্রাম, কালিকাদহ অবস্থিত। এরই মাঝখানে ঐতিহ্যবাহী রুহুল বিল অবস্থিত।

ভোরের আলো ফোটেনি, ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডা। বিলের দিকে আজ ১ ডিসেম্বর নামর মানুষের ঢল। যেন কী এক বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর আনন্দের হাসি। কারও কাঁধে পলো, আবার কারও হাতে ঠোলা জাল, খুইরা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ জড়ো হচ্ছে একই স্থানে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সববয়সী মানুষের উপস্থিতিতে বিলপাড়ে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ। দলবেঁধে বিলের পানিতে নেমে মাছ শিকারের আনন্দে মেতে ওঠেন তারা। প্রতিবছরের মতো মঙ্গলবার ১ ডিসেম্বর কাকডাকা ভোর থেকে বেলা গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত এ চিত্র পাবনার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলিপাড়া গ্রামের ‘রুহুল বিলের’। বাউত উৎসবকে কেন্দ্র করে এই চিত্র।

বন্যার পানি নেমে গেলে বিল রুহুলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে, বোয়াল, রুই, কাতলা, গজার। প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হলো এই উৎসব। এই উৎসবে মেতেছেন এবার টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নাটোর পাবনার আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরসহ চলনবিলের মানুষ। পাবনার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও আশপাশের জেলার মানুষও যোগ দিয়েছিলো বাউত উৎসবে। ভোর থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে নসিমন, করিমন, মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে দলবেঁধে মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে তারা এসে হাজির হয় শৌখিন মাছ শিকারিরা।

রুহুলে গিয়ে দেখা যায়, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শীত উপেক্ষা করে শত শত শৌখিন মাছ শিকারি দলবেঁধে পলো, জালি (ছোট জাল), বাদাই জাল, ঠেলা জাল, ধর্মখরা ইত্যাদি নিয়ে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে জড়ো হয় রুহুল বিলের পাড়ে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলা কিছু অংশ মিলে অবস্থিত বিল রুহুলে এই মাছ ধরার উৎসব হয়। শৌখিন মাছ শিকারিরা প্রতিবছর এ উৎসব পালন করে থাকেন। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা বাউত উৎসব এই অঞ্চলের বড় একটি উৎসব। এ উৎসবে বিভিন্ন উপজেলার মানুষ মিলিত হয়ে মাছ শিকার করেন। এটা বাংলার একটি ঐতিহ্য।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তরা জলেন, আমাদের ঐতিয্য মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই যুগের পর যুগ ধরে টিকে থাকুক এ ঐতিহ্যটা। যা আজও এই অঞ্চলবাসী ধরে রেখেছে। দেশীয় মাছ রক্ষার্থে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কাজও করছে। সুতরাং এই ঐতিহ্য যেন বিলুপ্ত না হয়ে যায়, সবাইকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে বাউত উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে এবং এর পক্ষে জনমত তৈরি ও বাউত উৎসবকে সরকারি স্বীকৃতি দিতে উদ্যোগ নেয়া হবে

এসএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাংলার একটি ঐতিহ্য :পাবনার রুহুল বিলের বাউত উৎসব

Update Time : ০৬:৪২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর ২০২০

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া-চাটমোহরের মধ্যবর্তী চলনবিল অঞ্চলজুড়েই প্রতিবছর এ সময়টিতে ধাপে ধাপে চলে এ বাউত উৎসব। জেলার দুইটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে চলনবিলের বেশকিছু অংশ। এর মধ্যে বিল রুহুল অন্যতম। এই বিলের পশ্চিমে চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা টেংগজানি, বোয়ালিয়া, উত্তরে পাটুলিপাড়া রঙ্গালিয়া দক্ষিণে লাউত কান্দি মধুরগাতি, আলমনগর, পূর্বে হাটগ্রাম, কালিকাদহ অবস্থিত। এরই মাঝখানে ঐতিহ্যবাহী রুহুল বিল অবস্থিত।

ভোরের আলো ফোটেনি, ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডা। বিলের দিকে আজ ১ ডিসেম্বর নামর মানুষের ঢল। যেন কী এক বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর আনন্দের হাসি। কারও কাঁধে পলো, আবার কারও হাতে ঠোলা জাল, খুইরা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ জড়ো হচ্ছে একই স্থানে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সববয়সী মানুষের উপস্থিতিতে বিলপাড়ে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ। দলবেঁধে বিলের পানিতে নেমে মাছ শিকারের আনন্দে মেতে ওঠেন তারা। প্রতিবছরের মতো মঙ্গলবার ১ ডিসেম্বর কাকডাকা ভোর থেকে বেলা গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত এ চিত্র পাবনার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলিপাড়া গ্রামের ‘রুহুল বিলের’। বাউত উৎসবকে কেন্দ্র করে এই চিত্র।

বন্যার পানি নেমে গেলে বিল রুহুলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে, বোয়াল, রুই, কাতলা, গজার। প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হলো এই উৎসব। এই উৎসবে মেতেছেন এবার টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নাটোর পাবনার আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরসহ চলনবিলের মানুষ। পাবনার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও আশপাশের জেলার মানুষও যোগ দিয়েছিলো বাউত উৎসবে। ভোর থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে নসিমন, করিমন, মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে দলবেঁধে মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে তারা এসে হাজির হয় শৌখিন মাছ শিকারিরা।

রুহুলে গিয়ে দেখা যায়, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শীত উপেক্ষা করে শত শত শৌখিন মাছ শিকারি দলবেঁধে পলো, জালি (ছোট জাল), বাদাই জাল, ঠেলা জাল, ধর্মখরা ইত্যাদি নিয়ে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে জড়ো হয় রুহুল বিলের পাড়ে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলা কিছু অংশ মিলে অবস্থিত বিল রুহুলে এই মাছ ধরার উৎসব হয়। শৌখিন মাছ শিকারিরা প্রতিবছর এ উৎসব পালন করে থাকেন। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা বাউত উৎসব এই অঞ্চলের বড় একটি উৎসব। এ উৎসবে বিভিন্ন উপজেলার মানুষ মিলিত হয়ে মাছ শিকার করেন। এটা বাংলার একটি ঐতিহ্য।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তরা জলেন, আমাদের ঐতিয্য মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই যুগের পর যুগ ধরে টিকে থাকুক এ ঐতিহ্যটা। যা আজও এই অঞ্চলবাসী ধরে রেখেছে। দেশীয় মাছ রক্ষার্থে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কাজও করছে। সুতরাং এই ঐতিহ্য যেন বিলুপ্ত না হয়ে যায়, সবাইকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে বাউত উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে এবং এর পক্ষে জনমত তৈরি ও বাউত উৎসবকে সরকারি স্বীকৃতি দিতে উদ্যোগ নেয়া হবে

এসএস//