সারাদেশ ডেস্ক : শীত শুরু হওয়ার আগেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার চারপাশে নেমে এসেছে কুয়াশা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি উড়ে এসেছে দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে ।
লাল পদ্ম শোভিত লেকগুলোয় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত করে জানান দিচ্ছে তাদের উপস্থিতি। নিজ আনন্দে তারা গান গেয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে এক লেক থেকে অন্য লেকে। এমন আচরণে মনে হচ্ছে যেন কোনো উৎসবে মেতেছে তারা। কেউ সাঁতার কাটছে, কেউ ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে শাপলা পাতার ওপর, কেউ আবার খুঁজছে খাবার, কারো বা অন্যদের সাথে খুনসুটি করেই কাটছে সময়। এই সুবর্ণনগরে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আপন মনে বিচরণ তাদের। শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসে এ যেন তাদেরই রাজত্ব। সবচেয়ে বেশি পাখির দেখা মিলছে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার, মনপুরা, বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরের লেকগুলোয়। এছাড়া ট্রান্সপোর্টের পাশের কিংবা রেজিস্ট্রারের পেছনের লেকেও তাদের আধিক্য চোখে পড়ার মতো।
হিমালয়ের উত্তরের সুদূর সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া, নেপাল প্রভৃতি দেশ থেকে প্রচন্ড তুষারপাতের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে না পেরে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে শীতের শুরুতেই আসতে শুরু করে এসব পাখি।
অতিথি পাখিদের অধিকাংশই হাঁসজাতীয়। এর মধ্যে পাতি সরালি, পান্তামুখী, পাতারি, পচার্ড, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, গার্গেনি, কোম্বডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা, ফ্লাইফেচার ও কামপাখি প্রধান। এছাড়া লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল, কাস্তে চাড়া, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, মানিকজোড়, খঞ্জনা, চিতাটুপি, বামুনিয়া হাঁস, নাকতা, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি নামের হাজার হাজার পাখিও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসে এই ক্যাম্পাসে।
পাখিদের নিরাপত্তা ও অবাধ বিচরণের জন্য প্রশাসন থেকে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লেকগুলো পরিষ্কার রাখা, উচ্চ শব্দে হর্ন না বাজানো, বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন টানানো ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।
এদিকে দীর্ঘ দিন বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারনে বন্ধ থাকায় আগের বছরের চেয়ে এ বছর ক্যাম্পাসে অতিথি পাখির সংখ্যা বেশি থাকবে বলে আশা করছেন পাখি গবেষকরা। তাদের ধারণা শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই ক্যাম্পাসেও বাড়তে থাকবে অতিথি পাখির সংখ্যা।
এসএস//
Leave a Reply