বরগুনা প্রতিনিধি: রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের মামলায় ১১ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে বরগুনায় একটি আদালত।
মঙ্গলবার ২৭ অক্টোবর দুপুরে বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায়ে ছয়জনকে ১০ বছর করে, চারজনকে পাঁচ বছর করে এবং একজনকে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত তিন কিশোর আসামিকে বেকসুর খালাস খালাস দেয়া হয়েছে।
১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, রাশিদুল হাসান রিশান (১৭), রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার (১৫), আবু আবদুল্লাহ রায়হান (১৬), অলি উল্লাহ ওলি (১৬), নাইম (১৭), তানভীর হোসেন (১৭)।
পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, জয় চন্দ্র সরকার চন্দন (১৭), নাজমুল হাসান (১৪), রাকিবুল হাসান নিয়ামত (১৫), মো. সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ (মহিবুল্লাহ)। প্রিন্স মোল্লাকে (১৫) তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
খালাস পাওয়া তিনজন হলো, মারুফ মল্লিক (১৭), রাতুল সিকদার (১৪) ও আরিয়ান শ্রাবণ (১৬)।
গত ১৪ অক্টোবর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজ ২৭ অক্টোবর দিন ধার্য করে আদেশ দেয়। রায়কে কেন্দ্র করে বরগুনার আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনা কারাগারে থাকা এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। জামিনে থাকা ৮ আসামিও আদালতে হাজির হয়। ৭৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের পর ৬৩ কার্যদিবসে এর বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে পৃথকভাবে আসামি করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান প্রাপ্তবয়স্ক মিন্নিসহ ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেন।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় দিনের বেলা কয়েকজন যুবক রিফাত শরীফের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। রিফাত শরীফের সাথে তখন তার স্ত্রী মিন্নি ছিলেন। ওই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপি প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়ে। ভিডিওতে দেখা যায় রিফাতকে কতিপর যুবক কোপাচ্ছে আর স্ত্রী মিন্নি হামলাকারীদের থামানোর চেষ্টা করছেন। পরে তাকেও আসামি করা হয়।
রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের দুই মাস ছয় দিন পর গত বছরের পহেলা সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির ২৪ জনকে আসামিকে প্রাপ্ত এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ভিত্তিতে দুই ভাগে বিভক্ত করে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে দুইটি পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামি এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এসএস//
Leave a Reply