Dhaka ১১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

গলিত লোহা শরীরে পড়ে মৃত্যু ২, দগ্ধ ৪

  • Update Time : ০৯:০২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০
  • / ০ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি রড প্রস্তুতকারক কারখানায় গলিত লোহা শরীরে পড়ে মিজানুর রহমান (৪২) ও ফাহিম (২৫) নামের দুই শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় আরও চারজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় দুই শ্রমিক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (২৩ অক্টোবর) তিনটার দিকে উপজেলার বরপা এলাকার প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিল কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। মিজানুর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ফাহিম লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আকবর হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে শাকিল (২০), একই উপজেলার বাউরা এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৪৫), রহমতপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে রাজু (৪০), কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার টিপু শেখের ছেলে আবু সিদ্দিক (৩০)। তারা সবাই ওই কারখানার ফার্নিশ বিভাগের অপারেটর ছিলেন।

শুক্রবার সকালে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে যাওয়া রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায় , বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে কারখানার একটি চুল্লিতে লোহা তৈরির জন্য ভাঙারির বান্ডিল গলানো হচ্ছিল। এ সময় বান্ডিলে থাকা কোনো একটি বস্তু বিস্ফোরিত হলে গলিত লোহা এসে শ্রমিকদের শরীরে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই মিজানুরের মৃত্যু হয়। পরে মালিকপক্ষের লোকজন আহত পাঁচ শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কাজ করার সময় দগ্ধ শ্রমিকদের গায়ে কোনো প্রকার সুরক্ষা পোশাক ছিল না বলে জানায় পুলিশ ও উপস্থিত লোকজন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, দগ্ধ হয়ে পাঁচ শ্রমিক হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেল চারটার দিকে ফাহিম নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শাকিল ও আবু সিদ্দিক নামের আরও দুজন শ্রমিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের শরীরের প্রায় ৯৯ ভাগ পুড়ে গেছে। বাকি দুজন শ্রমিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

নিহত মিজানুর প্রায় ১৫ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করেছিলেন। তার পরিবার জানায়,আগামী মাসে বাড়ি ফিরে গিয়ে গ্রামে রড–সিমেন্টের ব্যবসা দেয়ার কথা ছিল তার।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়,মিজানুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতিও চলছে।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেয়া মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও মালিকপক্ষের কেউ ফোন ধরেননি।

এ ধরনের কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শ্রমিকদের সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত না করা বেআইনি। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার এবং নিহত- দগ্ধদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে দাবী জানায়। এছাড়াও বিভিন্ন কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে কি-না তা মনিটরিংয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানায় শ্রমিকরা।

“এ ধরনের দূর্ঘটনার এড়াতে দ্রুতই মনিটরিং নিশ্চিতে পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনেরা।”

এসএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

গলিত লোহা শরীরে পড়ে মৃত্যু ২, দগ্ধ ৪

Update Time : ০৯:০২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি রড প্রস্তুতকারক কারখানায় গলিত লোহা শরীরে পড়ে মিজানুর রহমান (৪২) ও ফাহিম (২৫) নামের দুই শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় আরও চারজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় দুই শ্রমিক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (২৩ অক্টোবর) তিনটার দিকে উপজেলার বরপা এলাকার প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিল কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। মিজানুর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ফাহিম লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আকবর হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে শাকিল (২০), একই উপজেলার বাউরা এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৪৫), রহমতপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে রাজু (৪০), কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার টিপু শেখের ছেলে আবু সিদ্দিক (৩০)। তারা সবাই ওই কারখানার ফার্নিশ বিভাগের অপারেটর ছিলেন।

শুক্রবার সকালে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে যাওয়া রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায় , বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে কারখানার একটি চুল্লিতে লোহা তৈরির জন্য ভাঙারির বান্ডিল গলানো হচ্ছিল। এ সময় বান্ডিলে থাকা কোনো একটি বস্তু বিস্ফোরিত হলে গলিত লোহা এসে শ্রমিকদের শরীরে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই মিজানুরের মৃত্যু হয়। পরে মালিকপক্ষের লোকজন আহত পাঁচ শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কাজ করার সময় দগ্ধ শ্রমিকদের গায়ে কোনো প্রকার সুরক্ষা পোশাক ছিল না বলে জানায় পুলিশ ও উপস্থিত লোকজন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, দগ্ধ হয়ে পাঁচ শ্রমিক হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেল চারটার দিকে ফাহিম নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শাকিল ও আবু সিদ্দিক নামের আরও দুজন শ্রমিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের শরীরের প্রায় ৯৯ ভাগ পুড়ে গেছে। বাকি দুজন শ্রমিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

নিহত মিজানুর প্রায় ১৫ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করেছিলেন। তার পরিবার জানায়,আগামী মাসে বাড়ি ফিরে গিয়ে গ্রামে রড–সিমেন্টের ব্যবসা দেয়ার কথা ছিল তার।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়,মিজানুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতিও চলছে।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেয়া মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও মালিকপক্ষের কেউ ফোন ধরেননি।

এ ধরনের কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শ্রমিকদের সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত না করা বেআইনি। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার এবং নিহত- দগ্ধদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে দাবী জানায়। এছাড়াও বিভিন্ন কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে কি-না তা মনিটরিংয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানায় শ্রমিকরা।

“এ ধরনের দূর্ঘটনার এড়াতে দ্রুতই মনিটরিং নিশ্চিতে পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনেরা।”

এসএস//