সারাদেশ ডেস্ক : চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা করোনাভ্যাক ব্যাপক মাত্রায় নিরাপদ ব্রাজিলের ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে। তবে এখনো পুরো পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় এই টিকা কতটা কার্যকর সে বিষয়ে ডাটা প্রকাশ করবে না তারা। ব্রাজিলে যেসব টিকার পরীক্ষা চলছে এখন পর্যন্ত, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় তার মধ্যে প্রাথমিক ফলে করোনাভ্যাকই সবচেয়ে নিরাপদ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। করোনাভ্যাক টিকা তৈরি করেছে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক। করোনা ভাইরাস ভয়াবহভাবে আক্রমণ করেছে ব্রাজিলে। তাই সেখানে করোনাভ্যাক সহ আরো কিছু টিকার শেষ পর্যায়ের ব্যাপক পরীক্ষা চলছে। ব্রাজিলের শীর্ষ স্থানীয় বায়োমেডিকেল গবেষণা কেন্দ্রের অন্যতম সাও পাওলোর বিউট্যানট্যান ইনস্টিটিউট।
তারা সিনোভ্যাকের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা করছে। তাদের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত ৯০০০ স্বেচ্ছাসেবকের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে এই টিকার দুই ডোজ। তাতে এই টিকাকে নিরাপদ বলে তথ্য মিলেছে। তবে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক দিমাস কোভাস বলেছেন, মোট ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সবার ওপর পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই টিকা কতটা কার্যকর সে বিষয়ে কোনো ডাটা প্রকাশ করা হবে না। চলমান পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সবার অবস্থার ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। বিশ্বজুড়ে করোনাভ্যাকের তৃতীয় পর্যায়ের যে পরীক্ষা চলছে, তার মধ্যে ব্রাজিলের গবেষণার এই ফল হলো প্রথম। এই পরীক্ষা ব্রাজিল ছাড়াও করা হচ্ছে তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়ায়। তিনি আরো বলেছেন, যেসব স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষতিকর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। শতকরা ২০ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী বলেছেন, ইনজেকশন দেয়ার ফলে তারা হালকা ব্যথা পেয়েছেন। প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার পর শতকরা ১৫ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী মাথাব্যথার কথা বলেছেন। তবে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পর এই হার নেমে শতকরা ১০ ভাগে দাঁড়ায়। শতকরা ৫ ভাগেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী নাক দিয়ে পানি পড়া, ক্লান্তির কথা বলেছেন। আরো কম সংখ্যক মানুষ বলেছেন মাংসপেশীতে ব্যথার কথা। এই টিকা দৃশ্যত প্রতিরক্ষামুলক এন্টিবডি তৈরি করে বলেই মনে হচ্ছে। তাই এ বছরের শেষ নাগাদ কারোনাভ্যাক অনুমোদন দেয়ার আশা করছেন তারা। আর ২০২১ সালের শুরুতে তিনি এই টিকা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করা শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
রয়টার্স লিখেছে, সিনোভ্যাক চেয়েছে ব্রাজিলকে একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে। কারণ, করোনা ভাইরাস বিশ্বের যেসব স্থানে ছড়িয়েছে তার মধ্যে ব্রাজিল একটি হটস্পট। জুলাইয়ের শেষের দিকে সেখানে প্রতিদিন করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে ব্রাজিলে ৫২ লাখের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে ব্রাজিল বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত দেশ। এর আগে রয়েছে ভারত। শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এসএস
Leave a Reply