Dhaka ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

‘শিক্ষা’ শিশুর মৌলিক অধিকার

  • Update Time : ০১:৩৮:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২০
  • / ৩ Time View

সারাদেশ ডেস্ক: শিক্ষার সুযোগ লাভ করা শিশুর অন্যতম প্রধান মৌলিক অধিকার। অধিকাংশ দেশেই সামাজিক দায়-দায়িত্বের অংশরূপে এবং অভিভাবকের দিকনির্দেশনায় কিংবা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক শিক্ষানীতির আলোকে শিশুরা বিদ্যালয় গমন করে।

এছাড়াও ক্ষুদে শিশুরা কিন্ডারগার্টেনের প্লে-গ্রুপে আনন্দ ও খেলার ছলে শিক্ষাগ্রহণ করে শৈশবকালীন প্রাথমিক শিক্ষাকে আলোকিত ও আনন্দময় করে তুলে। কিন্তু অনুন্নত দেশে মাঝেমাঝে কিংবা প্রায়শঃই মাতা-পিতার সাথে শ্রমকার্যে অংশগ্রহণ করে অর্থ উপার্জনে জড়িয়ে পড়তে হয়। অথবা যুদ্ধে অংশ নিতে হয়। দারিদ্র-পীড়িত বাংলাদেশে অপুষ্টি স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। অপুষ্টিজনিত কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে পরিচিত শিশুরা বিশ্ব ব্যাংকের জরীপে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করেছে যা মোটেই কাঙ্খিত নয়।
শিশুদের নিয়ে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানীসহ অসংখ্য বিজ্ঞজন ভাবছেন। তাদের সেই ভাবনা অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ নির্ধারিত হয় শিশু-শিক্ষার মৌল আদর্শ। শিশুর অপার সম্ভাবনা, তাদের অসীম কৌতূহল, অফুরন্ত আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে মানবিক বৃত্তির সুষ্ঠু বিকাশ সাধনের মৌলিক পটভূমিতে পরিমার্জন করা হয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের। ২০১১ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পুনঃনির্ধারিত হয় শিশুর সার্বিক বিকাশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে সামনে রেখে।
সঠিক শিক্ষা কাঠামো এবং যথাযথ শিক্ষা পদ্ধতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ইপ্সিত চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক। তাই শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন চলছে। দিন বদলের ইশতেহার, রপকল্প-২০২১ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পদক্ষেপ হিসেবে ২৪টি লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুমোদিত হয়। মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়নে ও প্রগতি অর্জনের উদ্দেশে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলাই এই শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য।

শিশুকে আদর্শ ও সুচিন্তার নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সুশিক্ষার প্রয়োজন। বর্তমানে অনেক কারণেই ব্যাহত হচ্ছে সুশিক্ষা। বৈষম্য-এর অন্যতম কারণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের কথা বলতে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও সুবিধাভোগী শিশুদের কথা বোঝানো হচ্ছে। অনেকে মনে করেন, বস্তির শিশুদের আচার-আচরণ অন্যান্য শিশুর তুলনায় অনেকটা খারাপ হয়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে প্রতিটি শিশুকে সুশিক্ষা দিতে পারলে এবং তাদের সঙ্গে সুন্দর, আন্তরিক ও ভালো ব্যবহার করলে সকল শিশুর ব্যবহার ও আচরণে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক শিশু সনদ এবং শিশু আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনে প্রতিটি শিশুকে তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভের জন্য শিক্ষা, খেলাধুলা, খাদ্য ও পুষ্টি, বিনোদনের সর্বোত্তম ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে তাদেরকে রক্ষার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন ও হরতালের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটেছে। হরতাল-অবরোধ-বিক্ষোভ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালীন নিরাপত্তার অভাবে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। আবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে রাজধানী জুড়ে শুরু হয় অসহনীয় যানজট। তখন ছোট ছোট শিশুদের ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে নিরুপায় বসে থাকতে হয়। এতে স্কুলে যেতে দেরি হওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দেশের সুবিধাবঞ্চিত, স্কুল বহির্ভূত, ঝরে পড়া এবং শহরের কর্মজীবী দরিদ্র শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। দেশের নির্বাচিত ৮৯টি উপজেলায় ৭.৫০ লক্ষ শিশু শিক্ষার সুযোগ পাবে। দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরের কর্মজীবী শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের উন্নততর জীবন অনুসন্ধানে শিক্ষা, নিরাপত্তা ও উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষা প্রদানের কার্যক্রম চলছে।

এসএস//

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

‘শিক্ষা’ শিশুর মৌলিক অধিকার

Update Time : ০১:৩৮:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২০

সারাদেশ ডেস্ক: শিক্ষার সুযোগ লাভ করা শিশুর অন্যতম প্রধান মৌলিক অধিকার। অধিকাংশ দেশেই সামাজিক দায়-দায়িত্বের অংশরূপে এবং অভিভাবকের দিকনির্দেশনায় কিংবা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক শিক্ষানীতির আলোকে শিশুরা বিদ্যালয় গমন করে।

এছাড়াও ক্ষুদে শিশুরা কিন্ডারগার্টেনের প্লে-গ্রুপে আনন্দ ও খেলার ছলে শিক্ষাগ্রহণ করে শৈশবকালীন প্রাথমিক শিক্ষাকে আলোকিত ও আনন্দময় করে তুলে। কিন্তু অনুন্নত দেশে মাঝেমাঝে কিংবা প্রায়শঃই মাতা-পিতার সাথে শ্রমকার্যে অংশগ্রহণ করে অর্থ উপার্জনে জড়িয়ে পড়তে হয়। অথবা যুদ্ধে অংশ নিতে হয়। দারিদ্র-পীড়িত বাংলাদেশে অপুষ্টি স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। অপুষ্টিজনিত কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে পরিচিত শিশুরা বিশ্ব ব্যাংকের জরীপে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করেছে যা মোটেই কাঙ্খিত নয়।
শিশুদের নিয়ে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানীসহ অসংখ্য বিজ্ঞজন ভাবছেন। তাদের সেই ভাবনা অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ নির্ধারিত হয় শিশু-শিক্ষার মৌল আদর্শ। শিশুর অপার সম্ভাবনা, তাদের অসীম কৌতূহল, অফুরন্ত আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে মানবিক বৃত্তির সুষ্ঠু বিকাশ সাধনের মৌলিক পটভূমিতে পরিমার্জন করা হয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের। ২০১১ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পুনঃনির্ধারিত হয় শিশুর সার্বিক বিকাশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে সামনে রেখে।
সঠিক শিক্ষা কাঠামো এবং যথাযথ শিক্ষা পদ্ধতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ইপ্সিত চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক। তাই শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন চলছে। দিন বদলের ইশতেহার, রপকল্প-২০২১ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পদক্ষেপ হিসেবে ২৪টি লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুমোদিত হয়। মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়নে ও প্রগতি অর্জনের উদ্দেশে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলাই এই শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য।

শিশুকে আদর্শ ও সুচিন্তার নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সুশিক্ষার প্রয়োজন। বর্তমানে অনেক কারণেই ব্যাহত হচ্ছে সুশিক্ষা। বৈষম্য-এর অন্যতম কারণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের কথা বলতে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও সুবিধাভোগী শিশুদের কথা বোঝানো হচ্ছে। অনেকে মনে করেন, বস্তির শিশুদের আচার-আচরণ অন্যান্য শিশুর তুলনায় অনেকটা খারাপ হয়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে প্রতিটি শিশুকে সুশিক্ষা দিতে পারলে এবং তাদের সঙ্গে সুন্দর, আন্তরিক ও ভালো ব্যবহার করলে সকল শিশুর ব্যবহার ও আচরণে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক শিশু সনদ এবং শিশু আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনে প্রতিটি শিশুকে তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভের জন্য শিক্ষা, খেলাধুলা, খাদ্য ও পুষ্টি, বিনোদনের সর্বোত্তম ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে তাদেরকে রক্ষার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন ও হরতালের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটেছে। হরতাল-অবরোধ-বিক্ষোভ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালীন নিরাপত্তার অভাবে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। আবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে রাজধানী জুড়ে শুরু হয় অসহনীয় যানজট। তখন ছোট ছোট শিশুদের ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে নিরুপায় বসে থাকতে হয়। এতে স্কুলে যেতে দেরি হওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দেশের সুবিধাবঞ্চিত, স্কুল বহির্ভূত, ঝরে পড়া এবং শহরের কর্মজীবী দরিদ্র শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। দেশের নির্বাচিত ৮৯টি উপজেলায় ৭.৫০ লক্ষ শিশু শিক্ষার সুযোগ পাবে। দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরের কর্মজীবী শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের উন্নততর জীবন অনুসন্ধানে শিক্ষা, নিরাপত্তা ও উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষা প্রদানের কার্যক্রম চলছে।

এসএস//