Dhaka ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএফইউজে-ডিইউজে’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ : জরুরি মামলা শুনানিতে অবকাশকালীন বেঞ্চ জান প্রাণ দিয়ে জনআস্থা ধরে রাখতে হবে : তারেক রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক : সভাপতি রফিকুল মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক তোফাজ্জল কোটায় চাকরি : কুমিল্লার এসপি হচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে গুলি করা ছাত্রলীগ ক্যাডার নাজির সম্প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতিঝিল থানা ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিট বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যান সমিতির সভাপতি রফিক, মহাসচিব সাত্তার সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল বুড়িচং জগতপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছে একটি পরিবার

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় প্রয়োজন জনসচেতনতা ও কঠোরতা

  • Update Time : ০৯:২৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০
  • / ১ Time View

দিদারুল আলম :
ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ ও তাদের অধিকার রক্ষায় আইন থাকলেও আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া এবং সচেতনতার অভাবে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে ভোক্তা সাধারণ।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ভোক্তা অধিকারকে নাগরিকদের সাধারণ দেওয়ানি অধিকার হিসেবে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।

নাগরিকদের অপরিহার্য মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান। আমাদের দেশে মৌলিক নাগরিক অধিকারের এ বিষয়গুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব না পাওয়াতে ভোক্তা অধিকারও প্রায়-গুরুত্বহীন বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ‘ভোক্তা অধিকার’ নতুন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু আমাদের দেশে এখন এটি অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সময়ের দাবী।

বিভিন্ন দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন আছে। তারা বহুদিন থেকেই এধরনের আইন বাস্তবায়নের সুফল পেয়ে আসছে। নাগরিকদের ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য রাষ্ট্র বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়ে থাকে।

ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ভোক্তা অধিকারের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা দাম দিয়ে প্রতিনিয়ত ভেজাল পণ্য ও সেবা ক্রয় করি। ভেজাল পন্য দ্রব্য গ্রহন করে সীমাহীন স্বাস্থ্যঝুকিঁতে দেশের নাগরিকরা? তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ কি? সমাধান কি?

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় প্রয়োজন আরো জনসচেতনতা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো কার্যকর ভাবে ফাংশন করা। দেশে সব জায়গায় ভেজাল পণ্য ও সেবা। কিন্তু অন্যান্য দেশে ভোক্তা অধিকার লংঘনের কথা কল্পনাও করা যায় না। ভোক্তা অধিকার লংঘন করলে অনেক দেশে বিক্রেতার লাইসেন্স বাতিল করা হয়। শুধু তাই নিয়, আছে ফৌজদারি কঠোর দন্ডও। তাই আইনের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতাই বড় কথা।

যে কোনো দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের প্রথম পদক্ষেপ হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। আমাদের মাঝে সে সচেতনতা এখনো সৃষ্টি হয়নি। ফলে, ভোক্তারা পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছে অধিকার থেকে। মিথ্যাচার, ভেজাল, ফর্মালিন আজ ভোগ্যপণের সাথে মিশে গেছে। সব ধরনের খাদ্যদ্রব্যের মাঝেই ভেজাল। এমনকি জীবনরক্ষাকারী ঔষধেও। অসাধুচক্র তাদের মুনাফা অর্জনে করছে প্রতারণা,নাগরিকদের ঠেলে দিচ্ছে ভয়বহতার দিকে।

সরকার আইন প্রণয়ন করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নামে একটি অধিদপ্তর সৃষ্টি করছে। তবে তা আরো ত্বরাণ্বিত করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে কাজ করছে এ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের ৭টি বিভাগীয় কার্যালয় ও ৯টি জেলায় কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সবকটি জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ে তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নাগরিকদের রক্ষা ও নিরাপদ রাখতে এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে এখনি আরো সোচ্চার হতে হবে।

কি বিচিত্র ব্যাপার–খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যে ভেজাল থাকবে এটি যেন আমাদের দেশে একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয় হয়ে গেছে। সেই সাথে ওজন ও মানেরকোনো নিয়ন্ত্রন নেই। প্রশাসন-আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে কিছু ধরপাকড় ও জরিমানা। মোবাইল কোর্ট? অতপর গনমাধ্যমে কিছু প্রতিবেদন। এটিই কি যথেষ্ঠ? দুষ্টের দমনে প্রয়োজন আরো কঠোরতা। এটা সময় ও বাস্তবতার দাবী।

আমাদের আইনে আছে-জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি সংস্থা থাকবে। আইনানুযায়ী তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য সচিব, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবসহ ২০ জন সদস্য নিয়ে এ পরিষদ গঠিত হবে। ২০০৯ সালের আইনটি হওয়ার আগে কমবেশি ৪০ টি আইন ও ধারা বিচ্ছিন্নভাবে ভোক্তা অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল। সবগুলো আইনেই ভোক্তা অধিকারের কথা বলা আছে।

ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণকে আরো সচেতন করার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম জোরদার করা ও সরকারের মাঠ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাস্কৃতিক সংগঠনকে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজে লাগানো যায়। এতে অবশ্যই ইতিবাচক ফল আসবে। আইনটির যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর জনসচেতনতায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষিত হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এখনি জরুরি।

এসএস//

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় প্রয়োজন জনসচেতনতা ও কঠোরতা

Update Time : ০৯:২৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০

দিদারুল আলম :
ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ ও তাদের অধিকার রক্ষায় আইন থাকলেও আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া এবং সচেতনতার অভাবে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে ভোক্তা সাধারণ।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ভোক্তা অধিকারকে নাগরিকদের সাধারণ দেওয়ানি অধিকার হিসেবে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।

নাগরিকদের অপরিহার্য মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান। আমাদের দেশে মৌলিক নাগরিক অধিকারের এ বিষয়গুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব না পাওয়াতে ভোক্তা অধিকারও প্রায়-গুরুত্বহীন বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ‘ভোক্তা অধিকার’ নতুন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু আমাদের দেশে এখন এটি অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সময়ের দাবী।

বিভিন্ন দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন আছে। তারা বহুদিন থেকেই এধরনের আইন বাস্তবায়নের সুফল পেয়ে আসছে। নাগরিকদের ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য রাষ্ট্র বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়ে থাকে।

ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ভোক্তা অধিকারের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা দাম দিয়ে প্রতিনিয়ত ভেজাল পণ্য ও সেবা ক্রয় করি। ভেজাল পন্য দ্রব্য গ্রহন করে সীমাহীন স্বাস্থ্যঝুকিঁতে দেশের নাগরিকরা? তা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ কি? সমাধান কি?

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় প্রয়োজন আরো জনসচেতনতা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো কার্যকর ভাবে ফাংশন করা। দেশে সব জায়গায় ভেজাল পণ্য ও সেবা। কিন্তু অন্যান্য দেশে ভোক্তা অধিকার লংঘনের কথা কল্পনাও করা যায় না। ভোক্তা অধিকার লংঘন করলে অনেক দেশে বিক্রেতার লাইসেন্স বাতিল করা হয়। শুধু তাই নিয়, আছে ফৌজদারি কঠোর দন্ডও। তাই আইনের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতাই বড় কথা।

যে কোনো দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের প্রথম পদক্ষেপ হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। আমাদের মাঝে সে সচেতনতা এখনো সৃষ্টি হয়নি। ফলে, ভোক্তারা পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছে অধিকার থেকে। মিথ্যাচার, ভেজাল, ফর্মালিন আজ ভোগ্যপণের সাথে মিশে গেছে। সব ধরনের খাদ্যদ্রব্যের মাঝেই ভেজাল। এমনকি জীবনরক্ষাকারী ঔষধেও। অসাধুচক্র তাদের মুনাফা অর্জনে করছে প্রতারণা,নাগরিকদের ঠেলে দিচ্ছে ভয়বহতার দিকে।

সরকার আইন প্রণয়ন করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নামে একটি অধিদপ্তর সৃষ্টি করছে। তবে তা আরো ত্বরাণ্বিত করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে কাজ করছে এ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের ৭টি বিভাগীয় কার্যালয় ও ৯টি জেলায় কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সবকটি জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ে তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নাগরিকদের রক্ষা ও নিরাপদ রাখতে এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে এখনি আরো সোচ্চার হতে হবে।

কি বিচিত্র ব্যাপার–খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যে ভেজাল থাকবে এটি যেন আমাদের দেশে একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয় হয়ে গেছে। সেই সাথে ওজন ও মানেরকোনো নিয়ন্ত্রন নেই। প্রশাসন-আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে কিছু ধরপাকড় ও জরিমানা। মোবাইল কোর্ট? অতপর গনমাধ্যমে কিছু প্রতিবেদন। এটিই কি যথেষ্ঠ? দুষ্টের দমনে প্রয়োজন আরো কঠোরতা। এটা সময় ও বাস্তবতার দাবী।

আমাদের আইনে আছে-জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি সংস্থা থাকবে। আইনানুযায়ী তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য সচিব, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবসহ ২০ জন সদস্য নিয়ে এ পরিষদ গঠিত হবে। ২০০৯ সালের আইনটি হওয়ার আগে কমবেশি ৪০ টি আইন ও ধারা বিচ্ছিন্নভাবে ভোক্তা অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল। সবগুলো আইনেই ভোক্তা অধিকারের কথা বলা আছে।

ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণকে আরো সচেতন করার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম জোরদার করা ও সরকারের মাঠ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাস্কৃতিক সংগঠনকে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজে লাগানো যায়। এতে অবশ্যই ইতিবাচক ফল আসবে। আইনটির যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর জনসচেতনতায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষিত হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এখনি জরুরি।

এসএস//